সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবেশ রক্ষার লড়াই কোনও পুরস্কারের প্রত্যাশী নয়। এই মনোভাব ব্যক্ত করে ফের পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পুরস্কার ফিরিয়ে দিল সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ। তার এমন ব্যতিক্রমী প্রয়াসকে স্বীকৃতি দিতে নরডিক কাউন্সিল ৫ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা, দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই পুরস্কারের অর্থ নিতে অস্বীকার করে গ্রেটা। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে সে এর জবাবও দিয়েছে।
জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে নরডিক দেশগুলি অর্থাৎ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেনের খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের নিয়ে এদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক। নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এমনই যুক্তি দেখিয়েছেন ষোড়শী গ্রেটা। পাশাপাশি নিজের দেশ সুইডেনের ভূমিকা নিয়েও সে সমালোচনা করেছে।ডব্লিউডব্লিউএফ এবং গ্লোবাল ফুটপ্রিন্স নেটওয়ার্কের রিপোর্ট দেখিয়ে সে লিখছে, ‘সুইডেনও জীবাশ্ম জ্বালানি এমনভাবে ব্যবহার করে, যেন আমাদের পৃথিবীতে চারটি গ্রহের সমান জ্বালানি রয়েছে। আমরা এমন এক দেশের বাসিন্দা, যারা পরিবেশ রক্ষায় সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী হতে পারে, কিন্তু তারা প্রায় কিছুই করেনি।’
১৬ বছরের থুনবার্গ আপাতত ক্যালিফোর্নিয়ায় রয়েছে। তার দুই সহযোদ্ধা তথা বন্ধু সোফিয়া এবং ইসাবেলা মঙ্গলবার স্টকহোমে নরডিক কাউন্সিলের এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে থুনবার্গের পাঠানো বার্তাটি তারা পড়ে শোনায়। যাতে গ্রেটা লিখেছে, ‘এটা খুব বড় সম্মান। কিন্তু জলবায়ু রক্ষার লড়াইয়ে আর কোনও পুরস্কারের প্রয়োজন নেই। আমাদের সরকার এবং রাজনীতির ক্ষমতায় যারা আছেন, তাঁরা সমগ্র পরিস্থিতি উপলব্ধি করুন, গবেষকদের কথা মন দিয়ে শুনুন, সেটাই এই মুহূর্তে দরকার।’
[আরও পড়ুন: পথ দেখিয়েছে ‘প্রজ্ঞান’, চন্দ্রপৃষ্ঠে জলের খোঁজে নাসার রোবট ‘ভাইপার’]
পরিবেশ রক্ষা এবং সচেতনতার প্রচারে সুইডিশ কিশোরীর লড়াই গোটা বিশ্বের জানা। এমনকী তার কাজের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তার নাম মনোনয়নের কথা ভাবা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে চলতি বছরই ‘রাইট লাভলিহুড অ্যাওয়ার্ড’এ সম্মানিত হয়েছে থুনবার্গ। প্রথম পুরস্কারের প্রস্তাবটি অবশ্য এসেছিল ২০১৮তেই, স্কুল কামাই করে জলবায়ু নিয়ে সে আন্দোলন শুরু করার মাস তিনেকের মধ্যে। ষোল বছরের মেয়েটিকে ‘চিলড্রেন্স ক্লাইমেট প্রাইজ’ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পুরস্কার নিতে হলে বিমানে করে স্টকহোম যেতে হবে, তা শুনে গ্রেটা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে। যুক্তি হিসেবে জানায়, বিমানের দূষণ বিশ্ব উষ্ণায়নের বড় কারণ। তার প্রতিবাদে সৌরশক্তি চালিত নৌকায় আটলান্টিক সমুদ্র পাড়ি দিয়ে, সপ্তাহ দুয়েক পর নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে যোগ দিতে পৌঁছায় গ্রেটা। বুঝিয়ে দিয়েছিল, সে কাজ করতে চায়, পুরস্কারের প্রত্যাশী নয়।
The post ‘পরিবেশ বাঁচানোর লড়াই পুরস্কারের জন্য নয়’, অর্থমূল্য ফেরাল গ্রেটা থুনবার্গ appeared first on Sangbad Pratidin.