সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গিদের লাগাতার গুলি বৃষ্টির মাঝে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গিয়েছিল বাস। তবে তারপরও রেহাই মেলেনি। উপর থেকে বাস লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। রবিবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার মুখে পড়েও প্রাণে বেঁচে যাওয়া অভিশপ্ত বাসের এক যাত্রী শোনালেন সেদিনের হাড়হিম অভিজ্ঞতার কথা।
সেদিনের বিভীষিকাময় ঘটনার কথা স্মরণ করে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমরা বাসে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যে হামলা চালায় জঙ্গিরা। বাসটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। হামলায় প্রথমে গুলি চালানো হয় বাসের চালককে। এর পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে গড়িয়ে পড়ে বাসটি। এর মধ্যেই লাগাতার গুলি চলতে থাকে। প্রায় ২০ মিনিট টানা গুলি চালানো হয়। যাত্রীর দাবি, 'সেই সময়ে বাসের মধ্যে মড়ার মতো পড়ে ছিলাম আমরা। যাতে আমরা মরে গিয়েছি ভাবে গুলি চালানো বন্ধ হয়। লাগাতার গুলি বৃষ্টির পর চলে যায় ওরা। এর পর আমাদের উদ্ধার করতে আসেন স্থানীয়রা ও পুলিশ।'
[আরও পড়ুন: দুর্নীতির দায়ে জেল হয়েছিল, দ্বিতীয়বার সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন সেই প্রেম]
পাশাপাশি প্রাণে বেঁচে যাওয়া আরও একজন বলেন, 'আমি বাসের মধ্য থেকেই এক জঙ্গিকে দেখতে পাচ্ছিলাম। গুলি চালাতে চালাতে বাসের দিকে এগিয়ে আসছিল সে। আমাদের সবাইকে মেরে ফেলাই উদ্দেশ্য ছিল ওদের। খাদে পড়ে যাওয়ার ২০ মিনিট পরও গুলি চালানো থামায়নি জঙ্গিরা।' উল্লেখ্য, রবিবার শিব কিশোরী মন্দির থেকে তীর্থযাত্রী বোঝাই বাসটি কাটরার দিকে যাচ্ছিল। এই কাটরা থেকেই বৈষ্ণোদেবীর যাত্রা শুরু হয়। বাসটি রেয়াসিতে (Kashmir) পৌঁছনোর পরেই এই হামলা চলে। হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েই পথেই ওঁত পেতে ছিল ৭-৮ জন জঙ্গি। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহিলা, শিশু-সহ আহতের সংখ্যা ৩০ জন।
[আরও পড়ুন: শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাজ শুরু মোদির, আবাস যোজনায় বড়সড় বদল?]
উল্লেখ্য, কাশ্মীরে যখন এই হামলা হচ্ছে সেই সময়ে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিচ্ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানের সময়টাকেই নিশানা করেছিল জঙ্গিরা। যেন রাজধানী পর্যন্ত বার্তা পৌঁছনো যায়, সেই জন্যই অনুষ্ঠানের সময়ে নাশকতা চালিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি। ঘটনার পরের দিন হামলার দায় স্বীকার করে বার্তা দিয়েছে লস্করের (Lashkar-E-Taiba) অধীনস্থ দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট। তাদের আগাম হুঁশিয়ারি, আগামী দিনেও কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং পর্যটকদের রক্ত ঝরবে। এই হামলা তো বড়সড় নাশকতার সূচনা মাত্র।