সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে বিপন্ন গণতন্ত্র, বাড়ছে ধর্মীয় বিভাজন। সাম্প্রতিককালে ধর্মই হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। ৭৩ তম সাধারণনন্ত্র দিবসে অনলাইনে একটি অনুষ্ঠানে এভাবেই নিজের বক্তব্যে বিতর্কে উসকে দিলেন ভারতের প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি (Hamid Ansari)।
বুধবার ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিলের (Indian American Muslim Council) একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন হামিদ আনসারি। সেখানে তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে আমরা এক ধরনের প্রবণতা দেখছি, তা হল এতদিনের নাগরিক জাতীয়তাবাদকে সরিয়ে (সংখ্যাগুরুর) সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার প্রবণতা ।”
প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, “ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচনী সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রাপ্তির চেষ্ঠা চলছে রাজনৈতিক ক্ষমতা পেতে। ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে নাগরিকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। সামনে আসছে অসহিষ্ণু মানসিকতা, একপক্ষের উপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা হচ্ছে। অস্থিরতা ও নিরাত্তাহীনতার প্রচার চালানো হচ্ছে।” এইসঙ্গে হামিদ বলেন, “এই প্রবণতার সঙ্গে আমাদের লড়ত হবে। জবাব দিতে হবে আইনিভাবে তথা রাজনৈতিকভাবে।”
[আরও পড়ুন: উগ্র জাতীয়তাবাদকে মহামারীর সঙ্গে তুলনা! হামিদ আনসারিকে তুলোধোনা হিন্দু মহাসভার]
এদিকে হামিদের সমালোচনার কড়া জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের (Ministry of Minority Affairs) মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি (Mukhtar Abbas Naqvi)। তিনি বলেন, “যে কোনও ভাবে মোদিকে আঘাত করতে গিয়ে ভারতকেও আঘাত করা হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক।” আরও বলেন, “যাঁরা এতদিন সংখ্যলঘু ভোটকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে, তাঁরাই আজ দেশের সুপরিবেশকে নষ্ট করতে চাইছে।”
বুধবার ইন্দো-আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিলের ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা চার জন আমেরিকান আইনজীবীও। তাঁরাও ভারতে গণতন্ত্রের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
[আরও পড়ুন: দেশে মুসলিমরা আতঙ্কে রয়েছেন, উদ্বেগ আনসারির]
এর আগেও কেন্দ্রের মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন ভারতের প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ অস্বস্তিতে রয়েছেন। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সব ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি সহিষ্ণুতার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।” অপর পক্ষে হামিদের সমালোচনায় বারবার সরব হয়েছে গেরুয়া শিবিরও।