shono
Advertisement
Covishield

কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতটা গুরুতর, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ

Published By: Suparna MajumderPosted: 03:47 PM May 08, 2024Updated: 03:47 PM May 08, 2024

তিনটি ডোজ নিতেই হবে। সম্ভব না হলে কোভিশিল্ডের (Covishield) দুটি ভ্যাকসিন মাস্ট – এমনটাই জানিয়েছিল সরকার। কোভিড আবহে একমাত্র সুরক্ষা কবজের কাজ করেছিল এই টিকা। কিন্তু চার বছর পর সেই প্রতিষেধকই কার্যত 'ভিলেন'। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। মৃত্যুও হতে পারে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাম্প্রতিক সমীক্ষা তাইই নাকি বলছে। লিখছেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. শবনম আর বেগম

Advertisement

কোভিশিল্ড নিয়ে সাম্প্রতিক বিভিন্ন রকম নেতিবাচক আলোচনা শুরু হয়েছে। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি-র (ইএমএ) পরিসংখ‌্যান অনুযায়ী ১ লক্ষে একজনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার ব্রিটিশ হেলথ রেগুলেটর অনুযায়ী, আড়াই লক্ষে‌ একজনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ফাইল চিত্র

কী ধরনের সমস্যা?
প্লেটলেট স্বাভাবিকের থেকে কমে গেলে মানবদেহে ইমিউন রেসপন্স এবং অ‌্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ‌্যান্টিবডিগুলি শরীরে প্রোটিন তৈরি করে ওই উপাদানগুলিকে আক্রমণ করে রক্তের প্লেটলেট কমিয়ে দিতে পারে। এই রোগের উপসর্গ হিসাবে শরীরে নানা স্থানে রক্ত জমাট বাঁধে। পাশাপাশি মাথাব‌্যথা, পেটব‌্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা, পায়ে ফোলাভাব, চিন্তাভাবনার অসামঞ্জস‌্য, এমনকী, হার্ট অ‌্যাটাক বা সেরিব্রাল স্ট্রোকও দেখা দিতে পারে।

করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ওঠার পর ফের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়ে এমন আলোচনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে সূত্র থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে কোভিশিল্ডের নেতিবাচক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। একদিকে যেমন এই ভ্যাকসিন শরীরে স্থায়ীভাবে কোভিডের অ্যান্টিবডি তৈরি করছে, তেমনই হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, থ্রম্বোলাইটিস, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা, ঘুমের মধ্যেই আচমকা মৃত্যু, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট, দৃশ্যমানতার অস্পষ্টতা -- এমন নানাবিধ উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ফাইল চিত্র

শুধু ভারত নয়, কোভিশিল্ড গোটা বিশ্বের স্বীকৃত ভ্যাকসিন। তাই দুশ্চিন্তার মেঘ জমেছে বিশ্বের দুটি বিখ্যাত গবেষণা কেন্দ্র, ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ও ব্রিটিশ হেলথ রেগুলেটরে। একজন ক্লিনিকাল ফার্মাকোলজিস্ট হিসেবে বলতে পারি, প্রতিটি ওষুধেরই নূন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এখন আমাদের খুঁজে দেখতে হবে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভ্যাকসিনের জন্য হচ্ছে, না কি কোভিডের কারণে হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, অ্যাস্ট্রাজেনেকা শুরুতেই এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করেছিল।

[আরও পড়ুন: মত্ত মাতঙ্গের তাণ্ডব ক্যামেরাবন্দি করার চেষ্টা, বেঘোরে প্রাণ গেল সাংবাদিকের ]

লাভ কতটা?
একবার ভেবে দেখুন, প্রতিদিন কত মানুষ রাস্তায় বেরচ্ছেন, এবং কতজনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হচ্ছে? অর্থাৎ রিস্ক ফ্যাক্টর কতটা? হিসাব বলছে, ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি পরিসংখ‌্যান অনুযায়ী ১ লক্ষে একজনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সংখ্যাটা অত্যন্ত নগণ্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, শুধুমাত্র কোভিশিল্ডের জন্যই এই সমস্ত উপসর্গ বা অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হচ্ছে, এমন অভিযোগ করাই যেতে পারে কিন্তু তা ধোপে টিকবে না।
শুধুমাত্র কোভিশিল্ড নয়, অন্য যে সমস্ত ভ্যাকসিন রয়েছে যেমন – ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এইচ১-এন১ ভ‌্যাকসিন, অ্যান্টি র‌্যাবিসের মতো ভ‌্যাকসিনেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এমন কী, প্যারাসিটামলের মতো অত্যন্ত হালকা জ্বর বা ব্যথানাশক ওষুধও মাত্রাতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

ফাইল চিত্র

গবেষণা বলছে, কোনও ভ‌্যাকসিন বা ওষুধই একশো ভাগ নিরাপত্তা দিতে পারে না। তাহলে কোভিশিল্ডেরও কিছু নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া থাকতেই পারে। এই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। ঘটনা হল, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই এই ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজই নিয়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি করে মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করা।

কোভিশিল্ড ভ‌্যাকসিন নেওয়া ১০ লক্ষ‌ মানুষের মধ্যে সাত থেকে আট জন থ্রম্বোসিস বা থ্রম্বোসাইটোপেনিয়ন নামক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় বা তৃতীয় ডোজের পর সম্ভাবনা থাকে। আর বৈজ্ঞানিকভাবে এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া টিকা নেওয়ার প্রথম দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে দেখা দেয়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে কোভিশিল্ডের রিস্ক বেনিফিট তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, মানবসমাজে অনেক বেশি নিরাপত্তা এনে দিতে পেরেছে।

[আরও পড়ুন: দীপিকাকে খাওয়া নিয়ে খোঁটা অমিতাভের! ছবি শেয়ার করে নায়িকা নিজে ফাঁস করলেন তথ্য ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক আলোচনা চলছে।
  • বিশদে লিখলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. শবনম আর বেগম।
Advertisement