নব্যেন্দু হাজরা: বৃষ্টি (Rain) থেকে যেন রেহাই নেই রাজ্যবাসীর। শুক্রবার সকালেও মুখভার আকাশের। যদিও শুক্রবার দিনভর কলকাতায় তেমন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, একটানা দু’দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কের যোগাযোগ বন্ধ।
আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার কাটবে দুর্যোগ। সকালের দিকে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি কোনও কোনও অঞ্চলে হলেও শুক্রবার বিকেলের পর আকাশ পরিষ্কার হবে। যদিও দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায় শুক্রবারও বৃষ্টি চলবে। নিম্নচাপের জেরে বুধবার থেকেই কলকাতা-সহ (Kolkata) গোটা দক্ষিণবঙ্গে টানা বৃষ্টি চলছে। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সব মিলিয়ে কলকাতায় ১০০.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরপর দু’দিন শহরে এত বৃষ্টি বেশ কয়েক বছর পর দেখা গেল।
[আরও পড়ুন: Kasba Fake Vaccine: দেবাঞ্জনের দেওয়া টিকা কোভিশিল্ড নয়, জানাল Serum Institute]
নিম্নচাপের আশঙ্কা দেখা দেওয়ার পরই কলকাতা পুরসভা-সহ শহরতলির সবকটি পুরসভাই জল নামানোর সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। সর্বত্র রাস্তায় পোর্টেবল পাম্পও লাগানো হয়। ফলে অল্প সময়ে অত্যধিক বৃষ্টি হলেও কলকাতা ও সংলগ্ন সব অঞ্চলেই তুলনামূলকভাবে জল জমার পরিমাণ অনেক কম। বিভিন্ন অঞ্চলে জল নামানোর কাজও খুব দ্রুত হয়েছে। উত্তর কলকাতার নিচু এলাকা আমহার্স্ট স্ট্রিটে বিকেলের পর জল বাড়লেও পুরসভার একাধিক পোর্টেবল পাম্প দ্রুত তা সরিয়েছে। ধর্মতলা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ক্যামাক স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড, বালিগঞ্জ ইত্যাদি এলাকায় বিকেল থেকে জল জমে। কিন্তু সর্বত্রই সক্রিয় ছিল পুরসভার পোর্টেবল পাম্প। ম্যানহোল খুলে পোর্টেবল পাম্প দিয়ে পুরকর্মীরা লাগাতার জল নামিয়েছেন। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতার অধিকাংশ ওয়ার্ডেই গড়ে ১০০ মিমি’র বেশি বৃষ্টি হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। পার্ক স্ট্রিটে গাছ ভেঙে পড়ায় যানচলাচলে বিঘ্ন হয়।
পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, “রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে জমা জল সরাতে পুরসভার ৭৬টি পাম্পিং স্টেশনে ৩৮৯টি পাম্প কাজ করছে। এছাড়াও নানা ওয়ার্ডে ৪০০টির মতো পোর্টেবল পাম্প সক্রিয় রয়েছে। চালু হয়েছে পুরসভার কন্ট্রোল রুম।” এদিন গিরিশ পার্ক, আমহার্স্ট স্ট্রিট, শ্যামপুকুরের তিনটি বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ে। গিরিশ পার্কে এক ব্যক্তি আহত হন। বিপজ্জনক বাড়ি ও নিচু এলাকা থেকে বুধবারই বাসিন্দাদের সরিয়ে পুরসভার স্কুল ও কমিউনিটি হলে নিয়ে আসা হয়েছে। বাস-গণপরিবহণ যেমন কম ছিল তেমনই গতি ছিল খুবই মন্থর। যানজট হয় বিভিন্ন রাস্তায়। বিকেলে চক্ররেল বন্ধ রাখতে হয় গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ায়।
দেখুন ভিডিও: