শুভময় মণ্ডল: এখনও পুজোর বাকি প্রায় পাঁচ মাস। কিন্তু ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে পুজো কমিটিগুলির। ইতিমধ্যেই টিজার যুদ্ধে নেমে পড়ছে পুজো কমিটিগুলি। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ, কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছেন না। তবে সবচেয়ে বেশি তোড়জোড় পুজোর শিল্পীদের। কোনও পুজো কমিটি গতবারের শিল্পীর উপরেই ভরসা রেখেছে, আবার কোনও কোনও পুজোকমিটি অন্য কারও উপর আস্থা রেখেছে। লক্ষ্য সবার একটাই, তাদেরটাই হতে হবে বেস্ট।
রথযাত্রায় খুঁটি পুজো দিয়েই আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়ে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের। তারপর আর দম ফেলার ফুরসত পান না থিমশিল্পীরা। এবার দেখে নেওয়া যাক হেভিওয়েট পুজোর শিল্পীরা এবার কোন কোন পুজোকমিটিতে ঘাঁটি গাড়ছেন। এবার যেমন পুজোর শিল্পী অমর সরকার ঘাঁটি গাড়ছেন গৌরীবাড়ি সার্বজনীন এবং সল্টলেকের এফডি ব্লকে। সব ঠিক থাকলে এর সঙ্গে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারেও দেখা যেতে পারে তাঁর শিল্প। গতবার এসবি পার্ক সার্বজনীনে সবার দৃষ্টি ছিল ভবতোষ সুতারের সৃষ্টিতে। তার কাজ ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছিল বিভিন্ন পুরস্কারের মধ্য দিয়ে। এবার তার দ্বিতীয় পর্ব দেখতে পাবেন পুজোপ্রেমীরা। এর পাশাপাশি চেতলা অগ্রণীতেও তিনি থিমের দায়িত্বে। বেহালা ফ্রেন্ডসে গতবার অক্ষরে অক্ষরে মায়ের নাম মিলিয়েছিলেন শিল্পী বিশ্বনাথ দে। এবার তিনি সেলিমপুর পল্লিতে। থিমপুজোর একজন অন্যতম সেরা শিল্পী রূপচাঁদ কুণ্ডুর কাজ এবার দেখা যাবে বেহালা ফ্রেন্ডসে। গতবার নাকতলা উদয়ন সংঘে অন্তঃসার এবং ৯৫ পল্লিতে ইচ্ছেপূরণ করেছিলেন শিল্পী সুশান্ত পাল। এবার এই দুই পুজোকমিটির পাশাপাশি রাজডাঙা নবোদয় সংঘেও দেখা মিলবে তাঁর শিল্পর।
উত্তরের উত্তর গতবছর দিয়েছিল টালা বারোয়ারি। নেপথ্যে ছিলেন শিল্পী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘেও তাঁর শিল্পকর্মে ফুটে উঠেছিল এক টুকরো ভুটান। এবার দুই পুজো কমিটির পাশাপাশি তাঁর কাজ দেখা যাবে ভবানীপুরের অবসরেও। তাঁর ফেসবুকে নাম রয়েছে প্যান্ডেলওয়ালা হিসাবে। সেই শিল্পী অনির্বাণ দাসের কাঁধে এবার প্রচুর দায়িত্ব। হিন্দুস্তান পার্ক, দমদম পার্ক তরুণ দল, চক্রবেড়িয়া সার্বজনীন, বড়িশা উদয়ন পল্লি এবং আলিপুর সার্বজনীন, এই পাঁচ পুজোকমিটি এবার তাঁর উপর ভরসা রেখেছেন। সত্যি এবার খুবই ব্যস্ত থাকবেন তিনি। গতবার গোটা কলকাতাকে এক ফ্রেমে ধরে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন শিল্পী পূর্ণেন্দু দে। এবার তিনি রয়েছেন উল্টোডাঙা পল্লিশ্রীতে। নবীন শিল্পী প্রদীপ দাসের কাজ এবারও দেখা যাবে কাশী বোস লেনের পুজোয়। এছাড়াও বেহালা নূতন দলের থিমের দায়িত্বে তিনি। গতবছর শিবমন্দির দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর দায়িত্বে ছিলেন শিল্পী বিমল সামন্ত। এবার তিনি অজেয় সংহতিতে। শহরের বুকে মুদিয়ালি ক্লাবে একটুকরো রাজস্থানকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন শিল্পী দম্পতি শুভদীপ ও সুমি মজুমদার। এবার তাঁরা ওয়েলিংটনের নাগরিক কল্যাণ সমিতির পুজোর থিম করবেন।
গতবার হাতিবাগান সার্বজনীন এবং দমদম পার্ক ভারতচক্রে নিজের শিল্পকর্ম দিয়ে তাক লাগিয়েছিলেন সবার। সেই শিল্পী সঞ্জীব সাহা এবার ভারতচক্র এবং বেহালার নস্করপুর সার্বজনীনে নিজের জাদু দেখাবেন। পুজোর অন্যতম একজন সেরা শিল্পী প্রশান্ত পাল এবারও বেহালা নূতন সংঘে। সোনার দুর্গা করে গতবার তাক লাগিয়েছিল সন্তোষপুর লেক পল্লি। শিল্পী ছিলেন অদিতি চক্রবর্তী ও শুভমিতা দিন্দা। তাদের এবারের শিল্পী শিবশংকর দাস। গতবার হাতিবাগান নবীন পল্লিতে কাবার্ড শিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটানো শিল্পী গোপাল পোদ্দার এবার রয়েছেন দমদম পার্ক তরুণ সংঘের পুজোয়।
The post উত্তর থেকে দক্ষিণ, পুজোর শহরে এবার তাক লাগাবেন এই শিল্পীরা appeared first on Sangbad Pratidin.