চারুবাক: এই ছবির প্রচার পর্বে বলা হয়েছিল প্রায় সব বয়সের মানুষই কোনও না কোনও সময় ‘একা’, ‘নিঃসঙ্গ’ হয়ে পড়ে। তখন একজন সঙ্গী বা কাছের মানুষ খুবই প্রয়োজন হয়। অবশ্যই মন্তব্যটা মিথ্যে নয়। অন্তত ‘দিলখুশ’ ছবির (Dilkhush Movie) পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় এবং চিত্রনাট্যকারের কাছে। এই সময়ের সোশ্যাল অ্যাপ নাকি মানুষের জীবনে ওলটপালট করে দিচ্ছে। সেখান থেকেই টেক অফ করে বেশ জমাটি চিত্রনাট্য লিখেছেন অরিত্র মুখোপাধ্যায়।
কথ্য ভাষার সঙ্গে রঙ্গ রসিকতার পানিংগুলো মন্দ লাগে না। চার জন বিভিন্ন বয়সের মানুষের ‘দিলখুশ’ নামের ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে কাছাকাছি আসার ব্যাপারটা অভিনব এবং মজাদার। পরাণ-অনসূয়া, খরাজ-অপরাজিতা, সোহম-মধুমিতা আর উজান-ঐশ্বর্য, এঁরাই সেই আটজন। যাঁদের কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টায় ব্রতী অনন্যা-অনির্বাণ জুটি। হাসি-কান্না, অভিমান, খুনসুটি পেরিয়ে খুশির আবহ বজায় রাখে ‘দিশখুশ’। সংলাপের আধুনিক ‘পানিং’গুলো মজার, বিশেষ করে উজান-ঐশ্বর্যের খুনসুটিপনায়।
[আরও পড়ুন: এক ফোনেই ভোলবদল! শাহরুখের ‘পাঠান’ নিয়ে সুর নরম হিমন্ত বিশ্বশর্মার, কী বললেন?]
রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় গল্পের ফুরফুরে ভাবটিও সঙ্গ দেয়। ভালই লাগে বর্ষীয়ান পরাণ ও অনসূয়ার রোমান্সের ‘খেলা’ গুলো। কিন্তু সোহম-মধুমিতার রোমান্টিক পর্ব মাঝে মাঝেই একটু বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। খরাজ-অপরাজিতা জুটি সুন্দর মানিয়েছেন। খিচুরিতে যত খুশি ঘি আর প্রেমে যত বেশি চুমু ততই স্বাদ! সেটা বোধহয় সত্যি নয়, হলে পরিচালক একটি বারু চুমু দেখাতেই পারতেন।
প্রেম, বিরহ, হাসি-মজায় মাখানো ছবি ‘দিলখুশ’। এর মধ্যে সুস্বাদু সালাড হয়ে আছে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সুরেলা কন্ঠের গান “বিবাগী ফোন…” এবং তাঁর ধারাভাষ্য। মাঝে মাঝে তিনি কণ্ঠস্বর দিয়েই নিজের উপস্থিতি জানিয়ে দিয়েছেন। এভাবে তাঁকে ব্যবহারের পরিকল্পনা বাহবাযোগ্য। আর শিল্পীদের অভিনয়? পুরনো চাল ভাতে বাড়ে – সেটা প্রমাণের দরকার না থাকলেও বুঝিয়ে দিলেন পরাণ, অনসূয়া, খরাজ, অপরাজিতা। আর নতুনদের মধ্যে ঝাক্কাস ধাক্কা মারে উজান-ঐশ্বর্য! মধুমিতা ও সোহম চিত্রনাট্য থেকে আরও একটু সুযোগ পেতে পারতেন! তবুও বলব – তাঁরা চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। দর্শকের ‘দিল’ সাময়িক খুশি করে দিতে সক্ষম এই ছবি।
ছবি – দিলখুশ
অভিনয়ে – পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনসূয়া মজুমদার, খরাজ মুখোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য, সোহম মজুমদার, মধুমিতা সরকার, ঐশ্বর্য সেন, উজান চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অনন্যা সেন
পরিচালক – রাহুল মুখোপাধ্যায়