অভিরূপ দাস: ভোটের আগে জার্সি বদল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘দল বদলুদের’ মুখে একটাই কথা, “দলে থেকে কাজ করতে পারছি না।” নির্বাচনের আগে এক দল থেকে অন্য দলে যাওয়ার এমন ‘অজুহাত’ এবার কাজে লাগাতে চাইছেন রক্তদান শিবিরের আয়োজকরাও। কফি হাউস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রক্তদান শিবিরের স্লোগান, “দলে থেকে কাজ করতে পারছেন না? রক্তদাতাদের দলে আসুন। কাজ করে আনন্দ পাবেন।”
করোনা (Coronavirus) আবহে শিকেয় উঠেছিল রক্তদান শিবির। আনলক পর্বে ধীরে ধীরে শিবির চালু হলেও চাহিদা অনুযায়ী রক্ত সংগ্রহ হচ্ছে না। প্রাক করোনা যুগে বিগত বছরগুলিতে আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে মজুত রক্তের পরিমাণ থাকতো ২৫ হাজার ইউনিট। গত বছর করোনা আবহে তা দাঁড়িয়েছিল ১০ হাজার ইউনিটের আশপাশে। এবছরও যে সেই চাহিদা পূরণ হবে এমনটা আশা করা যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: ‘দেশটাকে বেচে দিচ্ছে মোদি সরকার’, স্কুটারে নবান্নে পৌঁছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তোপ মমতার]
মেডিক্যাল ব্লাড ব্যাংকের অধিকর্তা ডি আশিস জানিয়েছেন, রাজ্যে প্রতিদিন ৪ হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। শুধুমাত্র থ্যালাসেমিয়া রোগী অথবা দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষ নন, রক্তের দরকার হয় গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার হওয়া রোগীদেরও। করোনার কারণে সামাজিক দুরত্ব মেনে রক্তদান শিবির করতে গিয়ে খুব বেশি লোককে শিবিরে আনা সম্ভব হচ্ছে না। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। কফি হাউস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অচিন্ত্যকুমার লাহা জানিয়েছেন, প্রতিটি পাড়ার ক্লাবই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক। পাড়ায় যে সমস্ত ক্লাব রক্তদান শিবিরের আয়োজন করত এ বছরটা তাঁরা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত। ফলে ধাক্কা খাচ্ছে রক্ত সংগ্রহের কাজ। তা নিয়েই কপালে ভাঁজ। নির্বাচনের প্রাক্কালে তাই দলবদলের ‘ভাঙা রেকর্ড’কেই হাতিয়ার করতে চাইছে কফি হাউস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।