সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন তাঁর অনেকদিনের। কংগ্রেসে থাকতে সে আশা পূরণ হয়নি। রাহুল গান্ধী নাকি পাত্তাই দেননি। শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি নিয়ে রাহুলের কাছে গেলে, তাঁকে অপমানিত হতে হয়েছিল। বিজেপিতে এসে একপ্রকার বদলা নিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। পুরস্কার স্বরূপ পেয়ে গেলেন কাঙ্ক্ষিত মুখ্যমন্ত্রীর পদও।
রবিবার সর্বানন্দ সোনওয়ালের পরিবর্তে অসমের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত বিশ্বশর্মার নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। আজ গুয়াহাটির লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের উপস্থিতিতে নিজেদের নেতা হিসেবে হিমন্তকেই বেছে নিয়েছেন বিজেপির বিধায়করা। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর নাম নাকি বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালই প্রস্তাব করেন। তার প্রস্তাব সকলের সম্মতিতে পাশ হয়ে যায়। যদিও সবকিছু শনিবারই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের সাংগঠনিক নেতা বি এল সন্তোষ ও অন্য শীর্ষ নেতারা দুই নেতার সঙ্গে আলোচনার পর হিমন্তকেই নেতা বেছে নেন। সোনওয়ালকে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব।
[আরও পড়ুন: মোদি সরকারের গাফিলতিতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দিকেই আঙুল তুলল ‘ল্যানসেট’]
মজার কথা হল, হিমন্ত আবার প্রাক্তন কংগ্রেসী। একটা সময় কংগ্রেসে সেসময়ের দলের বর্ষীয়ান নেতা তরুণ গগৈয়ের বিকল্প হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ইচ্ছে ছিল ২০১৬-র নির্বাচনে তরুণ গগৈয়ের পরিবর্তে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরুক কংগ্রেস। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে দরবার করতে নিজের সাঙ্গোপাঙ্গোদের নিয়ে সোজা দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতেও যান হিমন্ত। কিন্তু শোনা যায় সেসময় অসমের হবু মুখ্যমন্ত্রীকে পাত্তাই দেননি রাহুল। তাঁর সাক্ষাৎ না পেয়ে অসমে ফিরেই দলত্যাগ করেন তিনি। বিজেপিতে গিয়ে অসম-সহ গোটা উত্তরপূর্ব ভারতে কংগ্রেসের আধিপত্য কার্যত একার হাতে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর দৌলতেই কার্যত গোটা উত্তর পূর্ব ভারত ‘কংগ্রেস মুক্ত’।
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধোনা, দেশজুড়ে সার্বিক লকডাউনের পক্ষে সওয়াল IMA’র]
হিমন্তের এই অভাবনীয় সাফল্যের পুরস্কার দিল বিজেপি। আসলে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব এতটাই বেড়েছে যে সোনওয়াল-কাছারি উপজাতির প্রতিনিধি সোনওয়ালকেও সরিয়ে দিতে একপ্রকার বাধ্য হল গেরুয়া শিবির। উত্তরপূর্বের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিজের যোগ্যতাতেই ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছে গেলেন ৫২ বছর বয়সি এই নেতা।