shono
Advertisement

ফিরে এল ইতিহাস! করোনা রুখতে রাজ্য পুলিশের হাতিয়ার এবার আয়ুশ ক্বাথ

স্প্যানিশ ফ্লুকে ঘায়েল করেছিল এই আয়ুশ ক্বাথ। The post ফিরে এল ইতিহাস! করোনা রুখতে রাজ্য পুলিশের হাতিয়ার এবার আয়ুশ ক্বাথ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:58 AM Jun 15, 2020Updated: 01:17 PM Jun 15, 2020

গৌতম ব্রহ্ম: ১০২ বছর আগে এই অস্ত্রেই স্প্যানিশ ফ্লু-কে ঘায়েল করেছিল কলকাতা। তুলসী, দারচিনি, আদা, গোলমরিচের সেই পাচন বা ‘আয়ুশ ক্বাথ’ এবার রাজ্য পুলিশের অস্ত্রাগারেও! ইতিমধ্যেই ৫ হাজার বোতল আয়ুশ ক্বাথ কেনা হয়েছে। করোনা যুদ্ধে থাকা বাহিনীকে তা দেওয়া হচ্ছে। আরও ১০ হাজার বোতাল কেনা হবে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

Advertisement

চাঁদমার্কা পাচন’, অমৃতরিস্ট পাচন… পাচনের সঙ্গে বাঙালির সহবাস বহুদিনের। ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু-কে ঠেকাতেও ‘জ্বরের চা’ খেয়েছে কলকাতা। রবিঠাকুরও নিয়মিত পাচন খেতেন, খাওয়াতেন। নবকলবরে সেই ১০২ বছরের পুরনো পাচন আবার বাঙালির হেঁশেলে ঢুকে পড়েছে। পুলিশ থেকে আমলা সবাই দেদার খাচ্ছেন। অথচ রাজ্য সরকারের তরফে কোনও প্রোটোকল এখনো করা গেল না।

পুলিশের মধ্যে কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে। ইতিমধ্যে ২৫৬ জন পুলিশকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। পূর্ব কলকাতার আনন্দপুর থানা থেকে বেলেঘাটা থানা, একের পর এক শীর্ষ আধিকারিকের শরীরে থাবা বসিয়েছে নভেল করোনা। শুক্রবারও নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ১০ পুলিশকর্মী। বাহিনীর মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান কোভিড সংক্রমণ নিয়ে চিন্তায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কর্তারা। তাঁদের নির্দেশেই শ্যামবাজারের জে বি রায় মেডিক্যাল কলেজ থেকে আয়ুশ ক্বাথ গিয়েছে নবান্নে। সেখান থেকেই রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছে ‘জ্বরের চা’। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, জে বি রায় হাসপাতাল তো বটেই রাজাবাজারের শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠও বিভিন্ন ওষুধ নির্মাতা সংস্থার থেকে ‘কোটেশন’ নিচ্ছে। আগামী সপ্তাহে আরও ১০ হাজার আয়ুশ ক্বাথ কেনা হবে। যদিও আয়ুশ দপ্তরের যুগ্ম সচিব অদিতি দাশগুপ্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জেলার সমস্ত থানার ওসিদের গরম জল, আয়ুশ ক্বাথ ও দুধ-হলুদ খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আরামবাগেও মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের ক্বাথ খাওয়ানো হচ্ছে।

[আরও পড়ুন:করোনা সংক্রমণে চিন্তা বাড়াচ্ছে রাস্তায় পড়ে থাকা ব্যবহৃত মাস্ক, জরুরি বৈঠকের ডাক পুরমন্ত্রীর]

১৯১৮ সালে কলকাতায় থাবা বসিয়েছিল স্প্যানিশ ফ্লু। যা বোম্বে ফিভার (Bombay Fever) নামেই লোকমুখে প্রচলিত ছিল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ফেরত সৈনিকদের থেকেই সংক্রমিত হয়েছিল সেই ভাইরাস-জ্বর। বিশ্বের প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ভয়ংকর হয়ে ওঠা সেই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মোকাবিলায় কলকাতা তখন আয়ুর্বেদের শরণ নিয়েছিল। তুলসী, দারচিনি, আদা, গোলমরিচের পাচন বানিয়ে শহরবাসীকে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বৈদ্য-কবিরাজরা। এমনটাই দাবি করেছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ডা. বিশ্বজিৎ ঘোষ। দাবির সমর্থনে কবিরাজ বীরজাচরণ গুপ্ত ও কবিরাজ যামিনীভূষণ রায় সম্পাদিত ‘আয়ুর্বেদ’ পত্রিকার উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘অষ্টাঙ্গ আয়ুর্বেদ বিদ্যালয়ের দাতব্য ঔষধালয়ে এবার ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগী বহু সংখ্যক আরোগ্যলাভ করিয়াছে। ‘জ্বরের চা’ নামক এক প্রকার নতুন ঔষধ আবিষ্কারের ফলে এ রোগের চিকিৎসায় সাফল্য লাভ হইয়াছে।’বাংলার সেই পাচনই ‘আয়ুশ ক্বাথ’ নাম নিয়ে কোভিড মোকাবিলার ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠেছে। 

[আরও পড়ুন:ট্রেনের কামরায় ‘সহজপাঠ’, শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে অভিনব উদ্যোগ পূর্ব রেলের]

আয়ুশমন্ত্রকও করোনা মোকাবিলায় আয়ুশ ক্বাথ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। আয়ুশ মন্ত্রক ইতিমধ্যেই আয়ুশ ক্বাথের ফর্মুলা ‘অ্যাডভাইসরি’ আকারে প্রকাশ করেছে। তা মেনেই ‘আইএনটিসিএল’ ক্বাথ বানাচ্ছে। গোয়া, হরিয়ানা, কেরল, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, চণ্ডীগড়, দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীরের মতো রাজ্যেও কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার’-দের এই পাচন খাওয়ানো হচ্ছে। গোয়া এবং গুজরাতে মৃদু উপসর্গযুক্ত কোভিড পজিটিভ রোগীদেরও এই ক্বাথ দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যের কোভিড-যোদ্ধাদের হাতেও পাচনের রক্ষাকবচ তুলে দেওয়া উচিত। এমনটাই জানালেন পশ্চিমবঙ্গ আয়ুর্বেদ পরিষদের সহ-সভাপতি ডা. প্রদ্যোৎবিকাশ কর মহাপাত্র। তাঁর বক্তব্য, “এই ক্বাথে ব্যবহৃত সব ভেষজই প্রতিরোধ ক্ষমতাবর্ধক। ফলে নভেল করোনা শরীরে ঢুকলেও তেমন সুবিধা করতে পারবে না। তাছাড়া দারচিনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। ফলে, ডায়াবেটিসের রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন।”

The post ফিরে এল ইতিহাস! করোনা রুখতে রাজ্য পুলিশের হাতিয়ার এবার আয়ুশ ক্বাথ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement