সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাইবার দুনিয়াতেও চলবে নজরদারি। তা-ও আবার স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে। কে বা কারা জাতীয়তাবিরোধী (Anti National Post) কার্যকলাপে যুক্ত, নেট দুনিয়ার নানা মাধ্যমে তার বার্তা ছড়াচ্ছেন, তাঁর উপর নজর রাখতে এবার নিয়োগ করা হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক। প্রাথমিকভাবে জম্মু-কাশ্মীর ও ত্রিপুরা থেকে শুরু করে ক্রমেই তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Home Ministry) সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। বিতর্কিত শুনতে হলেও আপাতত সেই পথেই হাঁটছে কেন্দ্র।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাইবার অপরাধদমন শাখা থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশবিরোধী কার্যকলাপ ছড়িয়ে দিতে কারা কীভাবে সক্রিয়, তার উপর নজর রাখাই হবে এই স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ। স্বেচ্ছাসেবকরা নজর রাখবেন, কে কোথায় কী ধরনের তথ্য আদানপ্রদান করছে, তার উপরও। সরকারের কোনও গোপন নথি, বেআইনি কোনও নথি বাইরে চলে যাওয়া, শিশুদের নিয়ে তৈরি নীল ছবি, ধর্ষণ এবং সন্ত্রাসের ছবি সম্প্রচার, মৌলবাদী প্রচার এবং জাতীয়তাবাদ বিরোধী প্রচার, সবকিছুর উপরই নজর রাখবেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা। কারা এই ধরনের তথ্য তৈরি করছে এবং কারা তা ছড়িয়ে দিচ্ছে তা কিন্তু আর নজরের আড়ালে থাকবে না। প্রতিমুহূর্তেই তাতে নজর রাখবেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
[আরও পড়ুন : সপ্তাহে ৪ দিন কাজ করে ৩ দিন ছুটি? বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য আসছে নতুন আইন!]
এর জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের নিজেদের নাম নিবন্ধীকরণ করাতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য হিসাবে নাম, বাবার নাম, মোবাইল নম্বর এবং ই-মেল অ্যাড্রেস দিলেই নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব হবে। তবে এই সমস্ত তথ্যের কোনও বৈধতা যাচাই করার ব্যবস্থা থাকছে না। তবে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়ে তাদের বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে তাদের যে যোগাযোগ রয়েছে তা যেন সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা পাবলিক ডোমেনে স্বীকার না করেন। অর্থাৎ তাঁদের কাজটা হবে অনেকটা ‘আন্ডাকভার এজেন্ট’ বা গুপ্তচরের মতো। ‘মেঘের আড়াল’ থেকেই নজর রাখবেন সকলের কাজে।
সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ এক প্রবীণ আইনজীবী এ বিষয়ে বলেছেন, “এই নির্দেশ বা পদক্ষেপের মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে। সরকার বা আইন ব্যবস্থা-কারও কাছেই কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। তাছাড়া কোনও সাধারণ নাগরিককে যদি তাঁর সহ-নাগরিক সম্পর্কে গোপনে তথ্য দেওয়ার এবং খবর দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়, তবে তার হাতে বিপুল ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। যা যাচাই না করেই সত্য বলে ধরে নেওয়া হতে পারে। একজনের বক্তব্যের বিচার অন্যের থেকে ভিন্ন হতেই পারে।” এমনকী, এই স্বেচ্ছাসেবকরা ভুল করলে বা ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুলপথে চালিত করলে তার কী সাজা হবে, তা-ও নির্দিষ্ট নয়। ফলে বিষয়টি সবুজ সংকেত পেলেও তাতে কাজ কতটা স্বচ্ছ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।