সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগেই ৬৫-রও বেশি শিশুমৃত্যুর ঘটনায় খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল কলেজ। দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলেছিল সেই খবর। মুখ পুড়েছিল যোগী সরকারের। সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। কিন্তু ওই ঘটনা থেকে রাজ্য সরকার যে কোনওরকম শিক্ষায় নেয়নি, সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। এবার ফের শিশুদের মৃত্যুমিছিল ঘটনা ঘটল সেই একই হাসপাতালে। গত ৭২ ঘণ্টায় ওই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬১ জনের।
[নির্ভয়া কাণ্ডের ছায়া, আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর খুন]
কয়েকদিন আগেই অক্সিজেনের অভাবে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে উত্তাল হয় উত্তরপ্রদেশ-সহ গোটা দেশ। যদিও এবার পরিকাঠামোগত ত্রুটি নয়, মূলত এনসেফালাইটিস এবং অন্যান্য রোগেই ওই শিশুদের মৃত্যু ঘটেছে। এমনটাই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। জানা গিয়েছে, গত ২৭ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে মোট ৬১ জন শিশু মারা গিয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন মারা গিয়েছে এনসেফালাইটিসে। নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (NNICU)-তে মারা গিয়েছে ২৫ জন শিশু। এছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে আরও ২৫ জন শিশু। স্থানীয় চিকিৎসকদের মতে, মৃত শিশুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এর পিছনে কারণ হিসেবে প্রবল বর্ষণ, বন্যা এবং জমা জলকেই দায়ী করা হচ্ছে। এইসবের জন্যই রাজ্যের ঘরে ঘরে এনসেফালাইটিস ছড়িয়ে পড়ছে।
বিআরডি হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডাক্তার পি কে সিং-এর কাছ থেকে কোনও জবাব না পাওয়া গেলেও আর এক চিকিৎসক ডাক্তার আর এন সিং জানান, ‘আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে প্রবল বৃষ্টি।’ প্রবল বর্ষণ এবং বন্যার কারণেই এনসেফালাইটিসের বাড়বাড়ন্ত, মনে করছেন তিনি। ঠিক সময়ে মশা উপদ্রব না কমানো, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা না করা এবং শিশুদের ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণেই পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের। তবে হাসপাতালে অক্সিজেন কিংবা ওষুধপত্রের যে অভাব নেই, সে কথা অবশ্য স্পষ্ট করে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।
[রাম রহিমের সাজার ছায়ায় পিছোতে পারে ‘বাদশাহো’র মুক্তি!]
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে ৬০-এরও বেশি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল বিআরডি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। দাবি, ৩০ জনেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল অক্সিজেনের অভাবে। যদিও যোগী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তবে গঠন করা হয়েছিল তদন্ত কমিটি। এদিকে, মঙ্গলবার কানপুর থেকে বিআরডি কলেজের সাসপেন্ড হওয়া প্রিন্সিপাল রাজীব মিশ্র ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।