প্রীতিকা দত্ত: আজ থেকে বছর কয়েক আগেও প্রেম হওয়াটা যেমন ছিল বিরাট ব্যাপার। তেমন প্রেম ভাঙাটাও ছিল একটা সাংঘাতিক ঘটনা। তবে বর্তমান জেনারেশন বলে তাঁদের নাকি আজকাল সম্পর্ক ভেঙে গেলে কিছুই এসে যায় না। বরং তাঁরা প্রাক্তন প্রেমিক বা প্রেমিকার বন্ধু হয়ে যান।
তবে সকলের আবার এরকম হয় না। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ব্রেকআপ হলে এখনও একইভাবে ভেঙে পড়েন। মেনে নিতেই পারেন না যে এরকম কিছু তাঁদের সঙ্গে ঘটেছে। ফলে সেখান থেকে তৈরি হয় মন খারাপ। আর ওই মন খারাপই একসময় বড় রকমের বিষন্নতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে একটা কথা আজকাল সকলের মুখেমুখে ঘোরে। ব্রেকআপ হলে নাকি মেয়েরা যতটা কষ্ট পায়, ছেলেরা ঠিক ততটা কষ্ট পায়না। আসুন দেখে নেওয়া যাক মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় এবিষয়ে কি বলছেন। তাঁর মতে, “আমাদের সমাজে একটা ধারণা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে যেখানে বলা হয় ‘ছেলেদের কষ্ট হয় না’। এটা ভুল। ব্যথার বহিঃপ্রকাশ সকলেরই হয়। এবার সেটা এক-একজনের কাছে এক-একরকমের।”
সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলা হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের গভীরতা বাড়ে। তিরিশের কোঠা পেরিয়ে ব্রেকআপ হলে তা যথেষ্ট কষ্টকর। সে আপনি ছেলে হন বা মেয়ে। কারণ, তখন মানুষ একটা নিরাপদ জীবন খোঁজে।
পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে ডিভোর্সের পরে এক সাক্ষাৎকারে কল্কি কোয়েচলিন জানিয়েছিলেন, এই বিচ্ছেদই তাঁকে নিজেকে চিনতে সাহায্য করেছে। আবার দীপিকা পাড়ুকোনও স্বীকার করেছেন, ‘জীবনে ব্রেকআপ তাঁকে অনেকটা শক্ত করেছে।’ খুব সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক থেকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়াও এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ব্রেকআপ বেশ কষ্টকর এবং শিক্ষণীয়। এই সময় খুব কষ্ট হয় ঠিকই। কিন্তু ভাল করে ঘুমোলে, ভাল বই পড়লে আর বন্ধুদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটালে কষ্ট আসতে আসতে আবার চলেও যায়।’ এবিষয়ে আবার মনোবিদ অনুত্তমা জানাচ্ছেন, “সম্পর্কের রসায়ন কতটা গভীর, তার উপর কষ্টটা ডিপেন্ড করছে। খুব অল্প দিনের মেলামেশায় অতটা কিছু বোঝা যায় না। তবে বছরখানেক বা তার বেশি পুরনো সম্পর্ক ভাঙলে তা সত্যিই কষ্টকর।”
[প্রেমিকা বিহনে বড় একা লাগে? আসলে কিন্তু সুখেই আছেন]
তবে ঘন্টার পর ঘণ্টা তাঁর কথা ভেবে বসে থেকে মন খারাপ করে আর কোনও লাভ নেই। তার চেয়ে বরং সময়ের সঙ্গে বদলে ফেলুন নিজেকেও। এবার প্রেম ভাঙলে রাতভর কান্নাকাটি না করে অন্যভাবে ভাবুন। যেমন, জিমে গিয়ে ওয়ার্কআউট করতে পারেন। প্রয়োজন হলে বই পড়ে, সিনেমা দেখে মন ভাল করতে পারেন। এমনকি বন্ধুদের সঙ্গেও সময় কাটাতে পারেন। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে শপিং করা, পার্লারে গিয়ে মেক ওভার করাও খুব ভাল কাজ দেয়।
আবার একটা সম্পর্ক থেকে আরেকটা সম্পর্কে যাওয়া তো এখন কোনও ব্যাপারই নয়। তবে যারা সেই বিষয়তেও লজ্জা পান বা ভয় পান, তাঁদের জন্য মনোবিদ অনুত্তমা বলছেন, ‘একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে অন্য কাউকে বেছে নেওয়া কখনওই অপরাধ নয়। নিজের জন্য ভাল ও নিরাপদ জীবন বেছে নেওয়ার অধিকার সকলেরই আছে।আপনিও সেটা করলে তাতে কোনও ক্ষতি নেই।’
[ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে প্রিয়জনকে দিন একটু অন্য ধরনের উপহার]
The post কীভাবে ব্রেকআপেও থাকবেন বিন্দাস? জানুন এই প্রতিবেদনে appeared first on Sangbad Pratidin.