সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দরিদ্রতার কারণে সুযোগ মেলেনি লকডাউনে অনলাইন ক্লাস (Online class) করার। তাই অভিমানে আত্মঘাতী হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। কেরলের মালাপ্পুরমের এই ঘটনায় স্তম্ভিত সকলে।
লকডাউনের জেরে ২৪ মার্চ থেকে দেশজুড়ে বন্ধ সমস্ত সরকারি বেসরকারি স্কুল। দেশে ‘আনলক-১’ জারি হওয়ায় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে দোকান-পাট, বাজার। কিন্তু স্কুল-কলেজ খোলেনি এখনও। ফলে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তবে অর্থাভাবে এই অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারেনি কেরলের মালাপ্পুরমের নবম শ্রেণির ছাত্রী, দেবিকা বালাকৃষ্ণন। অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু পড়াশোনা চালিয়ে যেতে মেয়ের প্রয়োজন স্মার্টফোন! বার বার বললেও সেই প্রয়োজনীয়তায় গুরুত্ব দিতে রাজি হননি দেবিকার বাবা-মা। তাই কয়েকদিন ধরেই এই মনমরা হয়ে ছিল এই কিশোরী।
[আরও পড়ুন:নেপথ্যে ISI, করোনায় কাবু তালিবানের রাশ ধরল মোল্লা ওমরের ছেলে]
জানা যায়, স্থানীয় সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া দেবিকা। তার বাবা পেশায় দিনমজুর। লকডাউনের জেরে তিনি কাজ হারানোয় সমস্যা দেখা দেয় সংসারে। টান পড়েছে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়েও। মেয়ে বার বার বলার পরেও সামান্য টিভিটাও সারিয়ে উঠতে পারেননি দেবিকার বাবা। তাই বলে আত্মহত্যা? মেয়ের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তকে দুঃস্বপ্ন হিসেবেও মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। কিশোরীর মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন:স্তন্যদানে অপারগ মা, করোনাতঙ্ক উপেক্ষা করে স্তন্যপান করিয়ে সদ্যোজাতর কান্না থামালেন নার্স]
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, গায়ে আগুন গিয়ে আত্মহত্যা করেছে দেবিকা। বাড়ির পাশেই পরিত্যক্ত একটি স্থান থেকে মিলেছে দেবিকার দেহ। পাশে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা গেছে। তাতে লেখা, “আমি চললাম”। মেয়েকে হারানোর পর কান্না ভেজা গলায় দেবিকার বাবা জানান, “দুপুরের পর থেকেই নিখোঁজ ছিল দেবিকা। মেয়েটা আমার কষ্টটা বুঝল না।” এরপরই মঙ্গলবার উদ্ধার হয় আগ্নিদগ্ধ তার দেহ। মনোবিদদের কথায় জেন ওয়াইদের জীবনের আকাঙ্খা ও অসহিষ্ণতার ফলেই এই ধরণের হটকারী সিদ্ধান্ত নেন তারা। অনেক সময় তারা এতটাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে যে পরিবারের সমস্যাও তাদের মনে দাগ কাটে না। দেবিকার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।
The post ‘আমি চললাম’, লকডাউনে অনলাইন ক্লাস করতে না পারায় অভিমানে আত্মঘাতী কেরলের কিশোরী appeared first on Sangbad Pratidin.