সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়া বোমের আঘাতে পুড়ে ছাড়খার জমির ধান। পুড়ল পাম্প সেটের ছাউনি । ভারতীয় বায়ু সেনার ঘাঁটি কলাইকুন্ডার পরীক্ষামূলক বম্বিংয়ের মহড়া চলছিল। কিন্তু নিক্ষিপ্ত সেই বোমা ‘বম্বিং জোনে’ না পড়ে, ধান জমিতে পড়ে। বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইনে লেগে প্রচন্ড শব্দে সেই বোমাটি ফাটে ধানের জমিতে।
সোমবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ সাঁকরাইল ব্লকের কেশিয়াপাতা এলাকার পেঁচাবিদা ও চেমটিডাঙা গ্রামের পিচ রাস্তার পাশে ধান জমিতে প্রকাণ্ড শব্দে আছড়ে পড়ে একটি বোমা। কেঁপে ওঠে চারদিক। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে মাঠের ধান। মাঠে থাকা একটি স্যালো পাম্পের অ্যাসবেস্টসের ছাউনটিতে আগুন লাগে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাম্পটিও। ঘটনার পরেই আশেপাশের গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে যান ঘটনাস্থলে। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলায় শহরে অভিযান ইডির, সল্টলেক-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি]
যদিও কলাইকুন্ডা ভারতীয় বায়ুসেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যেখানে বোমাটি পড়েছে সেটি কলাইকুন্ডার বম্বিং রেঞ্জের মধ্যেই পড়ে। এই বিষয়ে উইং কমান্ডার, কলাইকুন্ডা ভারতীয় বায়ুসেনার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশু তিওয়ারি বলেন, “এদিন বায়ুসেনার মহড়া চলছিল। আমাদের ফায়ারিং রেঞ্জ অনেকটা বড়। যেখানে বোমাটি পড়েছে সেটি ফায়ারিং রেঞ্জের মধ্যে পড়ে। হতাহতের কোন খবর নেই।” যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য বম্বিং রেঞ্জ থেকে ঘটনাস্থল অনেকটা দূরে।
এদিন ওই বোমাটি ধানের জমি পড়ার ফলে একদিকে যেমন ধান ও পাম্পের ছাউনি পুড়ে যায় তেমন জমিতে বিশাল গর্ত তৈরি হয়। জমির উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের হাইটেনশেন লাইনটি ছিঁড়ে কেশিয়াপাতা থেকে কুলটিকরি যাওয়ার পিচ রাস্তার গিয়ে পড়ে। ফলে আতঙ্ক তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, কলাইকুন্ডার বম্বিং রেঞ্জ ঝাড়গ্রাম ব্লকের দুধকুন্ডি এলাকায়। বায়ুসেনার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়মিত বম্বিংয়ের মহড়া হয়। এর আগেও লক্ষ্যভ্রষ্ট বোম সাধারণ মানুষের জমিতে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। এটা বায়ু সেনার বিষয়।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল কিষান সেলের ব্লক নেতা বিশ্বরঞ্জন মাহাতো বলেন, “যেখানে বোমাটি পড়েছে সেখান থেকে কলাইকুন্ডা বম্বিং রেঞ্জ প্রায় তিন কিমি দূরে। এদিন বোমাটি বিদ্যুতের লাইনে পড়ে ধান জমিতে পড়ে। জমির ধান পুড়ে যায়। পাম্প নষ্ট হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা দাবি করছেন যাতে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।”