সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোঁজ মিললেও, ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সহজ নয়। অরুণাচলে ভেঙে পরা বায়ুসেনার এএন-৩২ বিমানের উদ্ধারকাজে বাদ সাধছে স্বয়ং প্রকৃতি। পাহাড়ি অঞ্চলটিতে নামতে পারছে না হেলিকপ্টার। গহন অরণ্য ভেদ করে সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না সেনাবাহিনীর জওয়ানরাও। ফলে শেষমেশ হেলিকপ্টার থেকে দুর্ঘটনাস্থলে গড়ুর কমান্ডোদের একটি দলকে নামাতে চলেছে বায়ুসেনা।
[আরও পড়ুন: লোকসভায় হারের পর এবার রাহুল গান্ধীকে ‘ঘরছাড়া’ করছে কেন্দ্র!]
প্রায় আটদিনের সন্ধান শেষে মঙ্গলবার সন্ধে নাগাদ অরুণাচল প্রদেশের লিপোর ১৬ কিলোমিটার উত্তরে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। তবে তাতে সওয়ার সেনাকর্মীদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। বুধবার সকাল থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে একাধিকবার চক্কর দিয়েছে স্থল সেনার Mi17 ও ALH হেলিকপ্টারগুলি। তবে খাড়াই পাহাড়ি জায়গাটিতে কিছুতেই নামতে পারছে না কপ্টারগুলি। তাই এবার বায়ুসেনার বিশেষ গড়ুর কমান্ডোদের সেখানে ‘এয়ার ড্রপ’ করা হবে। উল্লেখ্য, অসমের জোরহাটে ১৩ জন যাত্রীকে নিয়ে বায়ুসেনার ওই এএন-৩২ বিমান হারিয়ে গিয়েছিল আটদিন আগে, গত ৩ জুন। বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর তল্লাশি অভিযানে নামে বায়ুসেনার সি-১৩০জে বিমান, সুখোই এসইউ-৩০, নৌসেনার পি ৮-আই বিমান। এছাড়াও সেই অভিযানে অংশ নেয় সেনা হেলিকপ্টার। সাহায্য নেওয়া হয় ইসরো-র উপগ্রহ চিত্র এবং ড্রোনের। রাতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং প্রতিকূল আবহাওয়া এই অভিযানে তাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তল্লাশি অভিযান বন্ধ হয়নি। সেনার পাশাপাশি, অরুণাচলের সি ইয়োমির শিকারিদেরও উদ্ধারকাজে লাগানো হয়। হারিয়ে যাওয়া বিমানের খোঁজ দিতে পারলে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করে বায়ুসেনা।
বিমানবাহিনী সূত্রে খবর, মঙ্গলবার অরুণাচল প্রদেশের ওই অঞ্চলে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল বায়ুসেনার এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। তখনই বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পায় তারা। বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর গত এক সপ্তাহ ধরেই এই অঞ্চলে তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছিল বায়ুসেনা। তবে বিমানের কোনও আরোহী আদৌ বেঁচে আছেন কি না সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি বিমানবাহিনীর তরফে। বায়ুসেনার এক অফিসার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা একটা থেকে দু’টোর মধ্যে ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।
৩ জুন বিমানটি যাচ্ছিল অরুণাচল প্রদেশের মেচুকায়। দুপুর একটার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার পরেই তার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশনও বিশেষ সেন্সরের সাহায্যে নিখোঁজ বিমানটিকে খুঁজতে সাহায্য করে। এছাড়া ১৫০০ সেনা, পুলিশ, স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিকারিরা নিখোঁজ বিমানের সন্ধানে পাহাড়ে তল্লাশি চালায়। শনিবার বায়ুসেনার প্রধান বিএস ধানোয়া নিজে জোরহাটে গিয়ে তল্লাশি অভিযানের খোঁজখবর নেন। নিখোঁজ বিমানের আরোহীদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে, এই খবর ছড়াতেই শোকের ছায়া অসম ও অরুণাচলের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে।
[আরও পড়ুন: বিফলে গেল সব চেষ্টা, মৃত্যু হল ১৫০ ফুট কুয়োর নিচ থেকে উদ্ধার শিশুর]