সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবারের বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) প্রথম কয়েকটি ম্যাচে খেলতে পারেননি। চোটের জন্য কাপযুদ্ধের দলে ফিরতে পারবেন কিনা, সেটাও নিশ্চিত ছিলেন না। তবে সেই ট্রাভিস হেডই (Travis Head) টিম ইন্ডিয়ার (Team India) বিরুদ্ধে মেগা ফাইনালের মঞ্চ একেবারে মাতিয়ে দিলেন। দুরন্ত মেজাজে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) ক্যাচ লুফে নেওয়ার পর, বাইশ গজে চালালেন ব্যাট হাতে তাণ্ডব। স্বভাবতই অস্ট্রেলিয়ার (Australia) ষষ্ঠবার বিশ্বজয়ী হওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিলেন তিনি।
এহেন ট্রাভিস হেড বলছিলেন, “ভাবতেই পারছি না এমন কিছু আমার জীবনে ঘটতে পারে। এক লাখ ৩০ হাজার ক্রিকেটপ্রেমীদের সামনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মজাই আলাদা। চোটের জন্য অনেক মাস ভুগছিলাম। কিন্তু সেই চোট সারিয়ে বিশ্বকাপে যে পারফর্ম করতে পারব, ফাইনালে শতরান করতে পারব ভাবতেই পারছি না।
চলতি বছরের জুনে এই ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেডের বিরুদ্ধেই বিশ্ব টেস্ট ফাইনালে করেছিলেন শতরান। ১৭৪ বলে তাঁর সেই ১৬৩ রানের ইনিংসের জন্য, ভারত ২০৯ সালে সেই টেস্ট ফাইনাল হেরে গিয়েছিল। এবারও ঠিক সেই আগ্রাসী মেজাজেই মহম্মদ শামি-জশপ্রীত বুমরাহ-মহম্মদ সিরাজদের বুঝে নিলেন বাঁহাতি ওপেনার। ১২০ বলে ১৩৭ করেন ট্রাভিস হেড। মারলেন ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কা।
[আরও পড়ুন: বিশ্বজয়ী হওয়ার স্বপ্ন অধরা, পর্দার আড়ালেই থেকে গেলেন রাহুল দ্রাবিড়]
এবং এমন ইনিংস খেলার সুবাদে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও রিকি পন্টিংয়ের তালিকায় নাম লেখালেন ট্রাভিস হেড। এর আগে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ১২১ বলে ১৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন পন্টিং। এর পর ২০০৭ সালের কাপযুদ্ধের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১০৪ বলে ১৪৯ রান করেছিলেন গিলক্রিস্ট।
তবে ২৪০ রানে গুটিয়ে গেলেও, ভারতের কাছে ম্যাচ জেতার সুযোগ চলে এসেছিল। জশপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ শামির দাপটে মাত্র ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারায় অজিরা। তবে সেই সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশানে। এই জুটি প্রসঙ্গে ট্রাভিস হেড যোগ করলেন, “এমন দলের অংশ হতে পেরে আমি অভিভুত। ঘরে বসে বিশ্বকাপ দেখার থেকে এটাই ভালো হল। আমার একটু চাপ লাগছিল। কিন্তু লাবুশানে আমার উপর থেকে সব চাপ কাটিয়ে দেয়। বিশ্বকাপের শুরুতে আমার জায়গায় মিচেল মার্শ ওপেন করছিল। ও যে খেলাটা খেলছিল, সেটাই আমাদের আলাদা একটা শক্তি দেয়। আমি সেটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।”
মাহেন্দ্রক্ষণ প্রস্তুত ছিল। ছিল হাজার হাজার ঝাড়বাতি রোশনাই। তবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম যে এভাবে অতলান্ত ট্র্যাজেডির সাগরে গোটা দেশকে ভাসিয়ে দেবে, কেউ ভাবতে পেরেছিল? গোটা টুর্নামেন্টে জুড়ে অপ্রতিরোধ্য ভারত। ব্যাটে-বলে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেননি রোহিত-কোহলি-শামিরা। আর সেই ফাইনালেই কিনা টুর্নামেন্টের সবথেকে খারাপ ম্যাচ উপহার দিয়ে দুঃখের নর্দমায় ডুবে গেল ভারত। স্লো পিচে একসঙ্গে ভারত চোক করে গেল। যেন দমবন্ধ হয়ে গেল গোটা দেশের।