সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও ভাগ্যের পরিহাস, কখনও নির্বুদ্ধিতা, কখনও স্নায়ুর চাপ সামলাতে না পারা। আইসিসির (ICC) বড় টুর্নামেন্টের নক-আউট পর্বে বারবার ব্যর্থ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কোনও কোনও ম্যাচে সেভাবে লড়াই করতে না পেরে। আবার কোনও কোনও ম্যাচের জয়ের মতো জায়গায় থেকেও। যার জেরে প্রোটিয়াদের নামের পাশে জুড়ে গিয়েছে 'চোকার্স' তকমা।
আসলে তিন দশকে প্রোটিয়াদের সেমিফাইনালে হারের রেকর্ড সত্যিই বেদনাদায়ক। সেই ১৯৯২ সালে প্রথম সেমিফাইনালে হার। বিশ্ব ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পর সেটাই ছিল বড় মঞ্চে প্রথম বড় সাফল্য প্রোটিয়াদের। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাগ্যের পরিহাসে হারতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ১৩ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার যখন ২২ রান দরকার ছিল, তখন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ রাখতে হয়। অদ্ভুত গণিতে খেলা যখন পুনরায় শুরু হল তখনও দক্ষিণ আফ্রিকাকে (South Africa) ২২ রানই তুলতে হত, কিন্তু সেটা মাত্র ১ বলে! সেই অসম্ভব সমীকরণে ১৯ রানে হারতে হয় প্রোটিয়াদের।
[আরও পড়ুন: ‘গায়ানায় অ্যাডভান্টেজ ইংল্যান্ড’, সেমিযুদ্ধের আগে ‘বিন্দাস’ স্বীকারোক্তি রোহিতের]
তার পর নিরানব্বইয়ে ফের হৃদয়ভঙ্গ। এবার অজিদের বিরুদ্ধে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৯ রান। প্রথম দু'বলেই দুটি চার মেরে দেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার লান্স ক্লুজনার। কিন্তু জয়সূচক রানটি নিতে গিয়ে তিনি রান আউট হয়ে যান। ম্যাচ টাই হয়ে যায়। সুপার সিক্সে অজিরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোয় তাঁরাই সুযোগ পায় ফাইনাল খেলার। সেবার সেটাই ছিল নিয়ম। এর পরও পাঁচবার ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গের সাক্ষী থেকেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৭ এবং ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সেমিতে তাঁরা হেরেছে অজিদের বিরুদ্ধে। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিতে তাঁরা হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে। এর মধ্যে ২০২৩ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপ সেমিতে একটা সময় ভালো লড়াইয়েও ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু স্নায়ুর চাপ সামলাতে না পেরে দুটি ম্যাচেই হারতে হয়। টি-২০ বিশ্বকাপেও প্রোটিয়া ভাগ্য ছিল একইরকম। এর আগে ২০০৯ সালে পাকিস্তান এবং ২০১৪ সালে ভারতের বিরুদ্ধে সেমিতে হেরেছে প্রোটিয়ারা।
[আরও পড়ুন: মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর দিল্লিতে শাহী দরবারে অনন্ত মহারাজ, তুঙ্গে জল্পনা]
অবশেষে পর পর সেমিফাইনালে হারের সেই রীতি ভেঙে ফেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। এইডেন মারক্রামের নেতৃত্বে প্রথমবার কোনও বিশ্বকাপের (ICC T20 World Cup 2024) ফাইনালে প্রোটিয়ারা। সেমিফাইনালে আফগানদের কার্যত গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ডি'ককরা। আর শুধু সেমিফাইনাল নয়, চলতি বিশ্বকাপে এখনও হারের মুখ দেখতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। চাপের মধ্যে পড়তে হয়েছে একাধিকবার। সেই চাপ সামলে বেরিয়েও এসেছে মারক্রাম ব্রিগেড। এখন অপেক্ষা শুধু ফাইনালের। বিশ্বকাপের খেতাবি লড়াইয়ে নাম লিখিয়ে হয়তো সাময়িকভাবে চোকার্স তকমা ঘোচানো গিয়েছে, কিন্তু ফাইনালে হেরে গেলে সেটা আবার সেঁটে যেতে পারে প্রোটিয়াদের নামের পাশে। সেটা জানেন মারক্রামরাও।