দুলাল দে: চুক্তিমতো ১৫ মে ভারতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) কোচের চেয়ার থেকে সরে যাওয়ার কথা ইগর স্টিমাচের। কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচের শিডিউলের দিকে তাকিয়ে আরও এক মাস, মানে জুন পর্যন্ত স্টিমাচকে রেখে দেওয়া হচ্ছে সুনীলদের দায়িত্বে। এর মধ্যে জাতীয় দল যদি পরবর্তী এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করতে পারে, তাহলে জাতীয় কোচের পদ থেকে চাকরি যাবে স্টিমাচের। ফের নতুন কোচ খোঁজা হবে সুনীল, সন্দেশদের কোচিং করানোর জন্য।
কিংস কাপে (Kings Cup) থাইল্যান্ডকে হারানো ছাড়াও বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে কাতারের বিরুদ্ধে ড্র করে সত্যিই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন ভারতীয় দলের নতুন কোচ ইগর স্টিমাচ। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও সাফল্যর মুখ দেখেননি এই ক্রোয়েশিয়ান কোচ। এমনকী গ্রুপের দুর্বল দুই দল আফগানিস্তান আর বাংলাদেশকেও হারাতে পারেনি স্টিমাচের (Igar Stimac) ভারত। তার উপর কিছুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর কাছে ৬ গোলে হারাটাও রীতিমতো খারাপ বিজ্ঞাপন হয়েছে ভারতীয় ফুটবলের জন্য।
[আরও পড়ুন: AFC কাপের প্রস্তুতি সারতে চলতি মাসেই শহরে আসছেন হাবাস, তৈরি বিদেশিদের তালিকাও]
ফলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তাহলে এত খরচ আর নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে স্টিমাচের মতো কোচ নিয়ে আসার অর্থ কী? যে কারণে, অনেকেই চাইছিলেন মে’তে চুক্তি শেষ হয়ে গেলে স্টিমাচকে বিদায় দিয়ে দিতে। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠে যায়, তাহলে জুন মাসে কাতারে প্রাক বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে ভারতীয় দলকে কোচিং করাবেন কে? ১৫ মে’ স্টিমাচকে বিদায় দিলে কোনও কোচের পক্ষেই ১৫ দিনের মধ্যে দেশে এসে পুরো দলকে ট্রেনিং করিয়ে এশিয়ান কাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করানো সম্ভব হবে না। প্রথম লেগে হেরে গেলেও, এই পর্বে যদি আফগানিস্তান, বাংলাদেশের সঙ্গে কাতার, ওমানের সঙ্গেও ভাল ফল করতে পারে, তাহলে গ্রুপের তৃতীয় স্থান পেলেও সরাসরি এশিয়ান কাপে (Asian Cup) খেলার সুযোগ পেয়ে যাবে ভারতীয় দল।
এই পর্বে করোনার (Coronavirus) কারণে সব ম্যাচই ২ জুন থেকে কাতারেই খেলতে হবে ভারতীয় দলকে। সেই কারণেই জুন পর্যন্ত জাতীয় দলের কোচ হিসেবে চুক্তি বাড়ানো হচ্ছে ইগর স্টিমাচের। এরপরেও যদি যাবতীয় বাঁধা বিপত্তি কাটিয়ে ভারতীয় দলকে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে নিয়ে যেতে তিনি সক্ষম হন, তাহলে আরও এক মরশুমের জন্য জাতীয় দলের সঙ্গে চুক্তি বাড়ানো হবে ইগর স্টিমাচের। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে জুলাই থেকে নতুন কোচ বসবেন ভারতীয় ফুটবলের চেয়ারে।
আপাতত ক্রোয়েশিয়ান কোচের পরামর্শ মেনে ২ মে থেকে কলকাতায় জাতীয় শিবির শুরু হচ্ছে সুনীল ছেত্রীদের। সেখান থেকে ২৩ মে কাতার উড়ে যাবে ভারতীয় দল। বাইপাসের ধারে বায়ো বাবলের মধ্যে ফুটবলারদের নিয়ে নিবিড় অনুশীলনে ব্যস্ত থাকবেন জাতীয় কোচ। তিনিও জানেন, জাতীয় কোচের চেয়ার ধরে রাখার জন্য এটাই তাঁর সামনে শেষ সুযোগ। তবে চাকরি বাঁচানোর জন্য জুন পর্যন্ত সময় পাওয়ার ক্ষেত্রে ফুটবলারদেরও কিছুটা অবদান রয়েছে।
[আরও পড়ুন: রোনাল্ডো-মেসিরও নেই, এমনই অনন্য রেকর্ডের মালিক হলেন এমবাপে]
স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের সময়ে যেরকম সুনীল, গুরপ্রীত, সন্দেশের মতো ফুটবলাররা একযোগে বিদ্রোহ করে দিয়েছিলেন। স্টিমাচের ক্ষেত্রে আপাতত সেরকম কোনও খবর নেই। বরং ফেডারেশন কর্তারা বেসরকারি ভাবে বেশ কিছু জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, প্রত্যেকেই স্টিমাচের কোচিংয়ে খুশি। তারপরেও ৬ গোল কি ভাবে খেতে হল, তার কোনও জবাব দিতে পারছেন না ফুটবলাররা। ফেডারেশন তাই জুন পর্যন্ত স্টিমাচকে সময় দেবে ঠিক করেছে।