অর্ণব আইচ: এসকর্ট সার্ভিস দেওয়ার জন্য বন্ধুত্বের ক্লাব। আর সেই ক্লাবের নাম করেই টাকা হাতানোর কারবার শুরু করেছিল দুই যুবক। খবর পেয়ে এই প্রতারণা চক্রের দুই পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সঞ্জীব ওঝা ও মঙ্গলময়। তারা আসলে মেদিনীপুরের বাসিন্দা। যদিও দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) সার্ভে পার্ক এলাকায় ডেরা বেঁধেছিল অভিযুক্তরা। সেখান থেকেই তাদের ধরা হয়। সম্প্রতি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকদের কাছে খবর আসে যে, কলকাতাজুড়ে চলছে এসকর্ট সার্ভিসের নামে প্রতারণা চক্র। ওই চক্রটি মূলত অনলাইনেই বিজ্ঞাপন দিত। সাধারণত ‘ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবে’র নামেই বিজ্ঞাপন দেওয়া হত। বলা হত, তাদের ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সুন্দরী মহিলারা। ওই মহিলারা এসকর্ট সার্ভিস দেন। তাঁদের নিয়ে কেউ শহরের কোথাও বা কলকাতার বাইরে নিয়ে গিয়েও সময় কাটাতে পারেন। পুরো ব্যবস্থাই করে দেবে এই ক্লাবটি। সেই টোপেও পা দিচ্ছেন অনেকে।
[আরও পড়ুন: দুয়ারে অশান্তি? ‘দিদিকে বলো’র আদলে নতুন প্রকল্প রাজ্যে, খবর দিলে পুরস্কৃত করবেন মুখ্যমন্ত্রী]
অনলাইনের বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করতেই অভিযুক্তরা কলার সেজে জিজ্ঞাসা করত, ওই ব্যক্তি সুন্দরী এসকর্টকে নিয়ে কোথায় যেতে চান? এর পর তাঁকে ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের মেম্বারশিপের জন্য অল্প কিছু টাকা দিতে বলা হত। অনলাইন অ্যাকাউন্টে সেই টাকা দিলে বলা হত, এসকর্টের সঙ্গ পেতে গেলে রেজিস্ট্রেশন চার্জ লাগবে। অনেকেই রেজিস্ট্রেশনের টাকা দিতেন। এরপর ওই ব্যক্তিকে বলা হত, তাঁর শারীরিক সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন মেডিক্যাল পরীক্ষার। সেইমতোও টাকা নেওয়া হত। কখনও কোনও ঘর ভাড়ার জন্য চাওয়া হত আগাম টাকা। এভাবে কারও কাছ থেকে ২০ হাজার, আবার কারও কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত এই চক্রের সদস্যরা।
সম্প্রতি লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দাদের কাছে এই প্রতারণা সম্পর্কে তথ্য আসে। তাঁরা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘খদ্দের’ সেজে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেইমতো অভিযুক্তদের মোবাইলের সূত্র ধরে জানা যায়, তারা সার্ভে পার্ক এলাকার একটি বহুতলের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে রয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিত ওই বহুতলে তল্লাশি চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের সঙ্গে থাকা অন্য অভিযুক্তদের সন্ধান চালানো হচ্ছে।