রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: রাজ্যের মন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে সরকারি অফিসে ভাঙচুর চালাল কর্মী। ঘটনাকে কেন্দ্র তুমুল উত্তেজনা পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলার দেশপ্রাণ ব্লকের কৃষি আধিকারিকের অফিস। অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম সুমন মাইতি। গ্রুপ ডি পদে কর্মরত তিনি। অভিযোগ, সুমনবাবুর দাবি তিনি রাজ্যের এক মন্ত্রীর ভাগ্নে। তাই প্রতিদিন দুপুর ২ টোর পর অফিসে যান তিনি। বারবার তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাতেও কোনও পরিবর্তন হয়নি। এদিন কৃষি আধিকারিক নির্মল কুমার দিন্দা সুমনকে রেজিস্টারে সই করতে বাধা দেন। তখন সুমন মাইতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে বলে সে মন্ত্রীর ভাগ্নে। তাই তার ক্ষেত্রে এসব নিয়ম খাটে না।
অভিযোগ, নিয়মিত অফিসের টেবিলের উপর পা তুলে বসে মোবাইলে গেম খেলেন সুমন। সাধারণ মানুষ থেকে জন প্রতিনিধি সবাই রীতিমতো তার উপর ক্ষুব্ধ। সকলের সঙ্গে অশান্তি করেন সুমন। বৃহস্পতিবার অফিসের একাধিক কম্পিউটার, কাগজপত্র, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে সে। শুক্রবার নিরাপত্তাজনিত কারণে কৃষি আধিকারিক ও অফিসের কর্মচারীবৃন্দ কর্ম বিরতির ডাক দেন। বহু মানুষ সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য নিত্যদিনের মতোই এদিনও অফিসে ভিড় জমান। কিন্তু অফিসের কাজকর্ম বন্ধ দেখে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি তরুণ কুমার জানা, বিডিও শুভজিৎ জানা, কাঁথি থানার আই.সি অফিসে এসে আধিকারিক ও কর্মচারিদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: নারী সুরক্ষায় নজর, বাসে হেল্পলাইন চালু করা যায়? রাজ্যের কাছে জানতে চাইল High Court]
এদিন বিক্ষোভরত মানুষকে তরুণবাবু আশ্বস্ত করে বলেন, “মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। তাই যিনি বাধা দেবেন তাকে রেওয়াত করা হবে না। এরপর বিকাল ৩টে নাগাদ হঠাৎ সুমন মাইতি অফিসে গিয়ে কৃষি আধিকারিকের উপর চড়াও হন। মুখে, গালে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারতে থাকেন, জামা ছিঁড়ে দেন, কম্পিউটার ভাঙেন, ফাইল ছিঁড়তে থাকেন। অফিসের কর্মচারী ও সাধারণ মানুষজন দৌঁড়ে কোনওরকমে তাঁকে উদ্ধার করেন। দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি তরুন কুমার জানা, বিডিও এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। কৃষি আধিকারিককে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।