রোববার ছিল বাঙালির গল্প পড়ার দিন। ঘরবন্দি জীবনে রোববারকে আর আলাদা করে চেনা যায় না। তবুও। লকডাউনের গল্প ‘অসুখ’। লিখলেন সরোজ দরবার।
অম্লানের মুখে হাসিটা দেখার মতো। এই নিয়ে টানা এক সপ্তাহ। আর সমস্যা হচ্ছে না। এই কথাটাই এক বন্ধুকে সে ফলাও করে বলছিল। সোফার উপর পা তুলে যেভাবে সে বসে আছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে মেজাজ তোফা। পাশেই বসে উমা। ফোনের ও-প্রান্তের কথা সে শুনতে পাচ্ছে না; অম্লানের কথা শুনে আঁচ করতে পারে কথোপকথনটা এরকমই হচ্ছে-
-ঘুম হচ্ছে এখন?
-বিন্দাস।
-ওষুধ খেতে হচ্ছে না তো আর?
-নাহ্।
-রাতে আবার ধড়মড়িয়ে জেগে উঠে বসছিস না তো?
-না রে…
-তার মানে তো…
-সেরে গেছে। একদম সেরে গেছে ভাই।
কথোপকথন আরও কিছুটা চলে। তারপর ফোন রেখে সে উমার দিকে তাকায়। চোখেমুখে প্রশান্তি। উমা বলে, এই নিয়ে মোট কতজনকে জানালে তার হিসেব রেখেছ? অম্লান বলে, কে জানে! তবে জানাব না! চাট্টিখানি ব্যাপার নাকি বলো?
উমা মাথা নাড়ে। অর্থাৎ, না, সে নিজেও জানে চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। অম্লানের এই আনন্দ হওয়া স্বাভাবিক। মাস কয়েক পিছিয়ে গেলেই বোঝা যাবে, কেন তার এত আনন্দ হচ্ছে। সে-কথা মনে পড়তে আজ আচমকাই শিউরে উঠল উমা। দিব্যি স্বাভাবিক জীবন ছিল তাদের। আচমকাই এক অসুখে পেল অম্লানকে। প্রথম যেদিন মাঝরাতে ধড়মড়িয়ে উঠে বসল সে, সেদিন বিশেষ পাত্তা দেয়নি উমা। ঘেমে স্নান, প্রবল হাঁফাতে থাকা অম্লানকে সে জিজ্ঞেস করে,
-খারাপ স্বপ্ন দেখেছ কিছু?
-খারাপ মানে, খুব খারাপ।
-কী হয়েছে? কী দেখেছ?
-কী দেখলাম জানো … দেখলাম, একটা ফাঁকা রাস্তার উপর আমরা দাঁড়িয়ে আছি। আমরা কোথাও থেকে বাড়ি ফিরছি বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই ফিরতে পারছি না।
-কেন?
-ফিরব কী করে? একটাও ট্রেন-বাস কিচ্ছু চলছে না।
-সে এত রাতে এমনিও কিছু চলছে না।
-না না, সেরকম নয়; কী একটা যেন হয়েছে, চারিদক বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কোথাও যেতে পারবে না। কেউ কারোর পাশে দাঁড়াতে পারবে না।
-সব বন্ধ!
-সব। গোটা পৃথিবীটা যেন আটকে গেছে।
-সকাল হলেই সব খুলে যাবে। এখন শুয়ে পড়ো দিকি।
হালকা চালেই ঘটনাটা নিয়েছিল উমা। কত লোক ভয়ের স্বপ্ন দেখে। আবার সব ভুলেও যায়। ও নিয়ে বেশি মাথা ঘামালে চলে! কিন্তু দুঃস্বপ্নের অ্যাটাকটা পিছু ছাড়ল না অম্লানের। পরদিন আবার সে ধড়মড়িয়ে উঠে বসল গভীর রাতে। উমা জিজ্ঞেস করে,
-আবার কী হল আজ?
অম্লান যারপরনাই ঘাবড়ে গিয়ে বলে,
-আবার স্বপ্ন।
-আবার!
-কী দেখলাম জানো, দেখলাম… আমরা সব একে মরে মরে যাচ্ছি। আমিও কখন যেন মরে গেছি। কে যেন সাদা কাপড়ে মুড়ে আমাদের সার সার মৃতদেহগুলো ফেলে রেখে গেছে একটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে। কিন্তু পোড়ানোর কি কবর দেওয়ার জন্য একটা লোকও নেই।
-উফ। যত আজেবাজে সিনেমা দেখে দেখে…
-না না, শোনো শোনো। আরও দেখলাম, মানুষ… জানো, বেশ কিছু মানুষ তখনও বেঁচে আছে। তাদেরকে চিড়িয়াখানার মতো করে কারা যেন আটকে রেখেছে। জানলার গরাদ থেকে মুখ বাড়িয়ে তারা দেখছে, তাদেরই বন্ধু কি পরিবার কি পরিজনের মৃতদেহ সার দিয়ে পড়ে আছে। হয়তো একদিন তারাও মৃতদেহ হয়ে উঠবে। আর সেই শ্মশানের মধ্যে মুখোমুখি দুই ব্যালকনির জানলা ধরে দাঁড়িয়ে আছে দুটো বাচ্চা। আর কেন কে জানে, তারা হাসছে। সেই মৃতের নিস্তব্ধতার উপর খলখলিয়ে বেজে উঠছে তাদের হাসি… সে হাসির আওয়াজ কী যে দমবন্ধকর অস্বস্তি বুকের ভিতরটা চেপে ধরল…
উমা উঠে জল এগিয়ে দেয় অম্লানের দিকে। কিন্তু এবার দুশ্চিন্তা হতে শুরু করে তার। একদিন সে শুনতে পায়, অম্লান তার বন্ধুকে ফোন করে বলছে, – স্পষ্ট দেখলাম জানিস… কে যেন এসে সব খাবারে বিষ ঢেলে দিল। যেন কেউ প্রতিশোধ নিচ্ছে। আর, তারপর খাবার-দাবার সব কেমন করে যেন উবে যেতে শুরু করল। আমি তাড়াতাড়ি বাজারের ব্যাগটা নিয়ে বেরোলাম; কিছু তো অন্তত আনতে হবে; দেখি আমি যত এগোই বাজার তত পিছোয়। যেন ধরাধরি খেলা চলছে। অনেকটা অনেকটা দূর এরকম হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দেখলাম, কোথাও একটা রান্না হচ্ছে অনেক লোকের জন্য। বললাম, বাড়িতে রান্না হচ্ছে না কেন? কিন্তু কেউ সে-কথার উত্তর দিল না। তারপর আরও এগিয়ে গিয়ে দেখলাম, লোকজনের হাতে প্যাকেটে করে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর, একদিকে দাঁড়িয়ে কেউ খচাখচ করে সে সবের ছবি তুলছে। আমি বললাম, আমাকেও একটা প্যাকেট দাও। আমারও ব্যাগ ফাঁকা। কিন্তু কেউ কিছু দিল না। তাড়াতাড়ি মুখে কাপড় ঢেকে সবাই সেখান থেকে এমন করে সরে পড়ল, যেন আমি তাদের চিনতে না পারি। তবে কি তারা আমার খুব পরিচিত কেউ ছিল! শুধু পড়ে রইল এক বুড়ি। আমি বললাম, তুমিও খাবার পাওনি বুঝি? বুড়ি হাসে, আর তার হাতে ধরা চাট্টি পাতা চিবোয়। ফের হাসে। হাসতেই থাকে; অম্লান ফোন রাখতে, উমা এসে বলে, তুমি স্বপ্নে দেখলে, যে, খাবারে কেউ বিষ মিশিয়ে দিয়ে গেল?
-দেখলামই তো। কেন বলতো!
উমা কিছু বলে না অম্লানকে। তার মনে পড়ে ‘মনসামঙ্গল’। মনসার নির্দেশে চাঁদ সদাগরের ছয় ছেলেকে মারতে বিঘতিয়া সাপ যেভাবে ভাতে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল—
চাঁদবান্যার তলেক নাহিক মায়া মো।
বিষ খায়্যা মরুক তাহার ছয় পো।।
চাঁদের ভবনে তুমি চলো বিঘতিয়া।
ওদন-ব্যঞ্জনে বিষ ওগরাহ গিয়া।।
কিন্তু সে-স্বপ্ন অম্লান দেখবে কেন? কোন মনসার কোপ আবার এসে পড়েছে তাদের উপর, উমা বুঝতে পারে না। তাদের মতো স্বচ্ছল ঘরের মানুষ অম্লান কেন না-খেতে পাওয়ার স্বপ্ন দেখবে?
২
কালবিলম্ব না করে ডাক্তার দেখানো হল অম্লানকে। কাউন্সেলিং শুরু হল। কিন্তু আর্ধেকদিন কাউন্সেলিংয়ে যেতেই চায় না অম্লান। বলে, যাব কী করে? বাস তো চলছে না। এখন তো বেরোতেই দিচ্ছে না ঘর থেকে।
বিরক্ত হতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয় উমা। সে জানে, সে স্থির না থাকলে, অম্লানের অসুখ সারবে না। সে বোঝায় অম্লানকে। অনেকটা বোঝানোর পরে সমে ফেরে অম্লান। বাড়ি থেকে সে বেরোয়। অফিসেও যায়। কিন্তু রাতে ঘুমোতে চায় না কিছুতেই। দেখেশুনে ডাক্তার হালকা ডোজের ঘুমের ওষুধ দিয়েছিল। তা খেয়ে অম্লান এক একদিন ভালই ঘুমোয়। কিন্তু বেশিরভাগ দিনই ধড়মড়িয়ে উঠে পড়ে। কোনওদিন বলে, অর্ধেক পৃথিবী নাকি কাঁটাঝোপে ভরে উঠেছে। কোত্থাও মানুষ নেই; কোনওদিন আবার বলে, মানুষ মানুষকে এত সন্দেহ করছে যে, কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সুযোগ বুঝলেই অনেকজন এসে একজনকে মারছে। তারপর আবার নিজেরাই মারামারি করছে। এ ওর ঘাড়ে দোষ দিচ্ছে। সে তার ঘাড়ে। যেন এক মৌষলকাল। রোজ এইসব শুনতে শুনতে এক একদিন কান্না পায় উমার। খুব একলা লাগলে সে তার স্কুলবেলার বন্ধু শ্রীতমাকে ফোন করে। শ্রীতমা তাকে সান্ত্বনা দেয়। বলে, চিন্তা করিস না, কোনও কারণে অম্লান একটা ডিসটোপিয়ার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। মানুষের পৃথিবীতে তো এমন হয় না। তুই একটু আগলে রাখ। ও আবার ভালো হয়ে যাবে।
শ্রীতমা যেভাবে কথাগুলো বলল, উমার তাতে মনে পড়ে বেহুলার কথা—
বেহুলার চরিত্রে পদ্মা ভয় পাইল চিতে।
রহো রহো বলি পদ্মা ধরে বেউলার হাতে।।
বেহুলাকেই একটু যা সমঝে চলে মনসা। তাই কিছু করতে হলে বেহুলাকেই করতে হবে। শ্রীতমাও যেন তাই-ই বলছে। তাকেই আগলে রাখতে হবে অম্লানকে। সাত পাঁচ ভেবে দিশা পায় না উমা। কোনও কোনোদিন অম্লানকে জোর করে নিজের কাছে টেনে নেয় সে। আর সেই ছেলেভোলানো রূপকথার গল্পের মতো করে শোনাতে থাকে – সেবার বসন্ত এল শহরে। চারিদিক ফুলে ফুল; লম্বা লম্বা বাড়ির ফাঁকেও একটু জায়গা করে মাথা তুলেছে কৃষ্ণচূড়া। গাড়ির শব্দ, লোকের চিৎকার ছাপিয়ে একটা কোকিলের ডাক ভেসে আসছে। নাছোড়বান্দা হতচ্ছাড়া! বন্ধুনিকে সে খুঁজে বের করবেই। কখন যে দুপুরের গায়ে বিকেলের ছায়া এসে পড়ে। বিকেল ক্রমশ ফিকে হতে থাকে। আর কী চমৎকার করে একটা সন্ধে নামতে থাকে শহরে। ক্লান্ত মানুষ বাড়ি ফিরবে বলে তখন প্রস্তুতি নিচ্ছে। পার্কে পার্কে খেলাধুলোর শেষটুকু চেটেপুটে নিচ্ছে ছেলেপুলের দল। একটা একটা করে আলো জ্বলে উঠছে শহরের রাস্তায়। অদ্ভুত সেই মায়াবি শহরের ভিতরে বসে প্রেমিকরা কাঁধে টেনে নিয়েছে তাদের প্রেমিকাকে। তাদের সন্ধে নামা ঘন চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে ভালোবাসার আঙুল। এই ক্লান্ত, ধ্বস্ত, জীবনযুদ্ধে পর্যুদস্ত জীবনেরও সেই এক মুহূর্তের জন্য বাঁচতে কী যে ভালোলাগে। শুধু এই লহমাটুকু ফিরে পাওয়ার জন্য, সে চায় রাত কেটে যাক দ্রুত; আবার একটা সকাল হোক। আর একটা সকাল ফিরে পাওয়ার জন্যই পৃথিবীটা যেন শান্ত একটা বাচ্চার মতো ঘুমিয়ে পড়ে। আর কী আশ্চর্য! এ-গল্প শুনতে শুনতে অম্লানও ঘুমিয়ে পড়ে কখন। কিন্তু এ তো গল্প নয়। এই স্বাভাবিক দৃশ্যের তো গল্প হওয়ার কথা ছিল না। অম্লানের কাছে যদিও এখন সকলই বিপরীত।
৩
যেন এক আশ্চর্য ভেলা ভেসে চলেছে। আর, তার উপর অসুস্থ অম্লানকে নিয়ে বসে আছে উমা। জলের মতো সময় কেবল বয়ে চলেছে। কোথায় যে পৌঁছাবে, উমা জানে না। শুধু সে জানে, অম্লানকে সুস্থ করে তুলতেই হবে। রোজ এমন অসুস্থ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখলে কোনও মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। অম্লানের এই অসুখ নিয়ে ভাসতে ভাসতে কী করে যে দিন-সপ্তাহ-মাস কেটে যায় উমার, সে আর ঠাহরও করতে পারে না। সে শুধু জানে, এই লড়াই তাকে জিততে হবে। সব খুঁটিনাটি সে লিখে রাখে ডায়েরিতে। ডাক্তার তা দেখে। সুবিধা হয় তাঁর, অম্লানকে বুঝতে। অম্লানের অসুখটাকে ধরতে। কেন একজন স্বাভাবিক মানুষ এমন একটা পৃথিবীর কথা ভাবছেন, যা কিনা মানুষ কল্পনা করতেও ভয় পায়! সমস্ত যানবাহন বন্ধ, রাস্তাঘাট শূন্য, মানুষ খাঁচার মধ্যে আটকে, মৃতের মিছিল, খাদ্য উধাও, পাতা চেবানো বৃদ্ধা রমণী, ঘরে ফিরতে না-পারা উদ্বেগ, আর কাঁটাগাছে ঢেকে যাওয়া আর্ধেক পৃথিবী – এই সমস্ত দৃশ্যাবলী জুড়ে জুড়ে যে পৃথিবী তৈরি হয়, তা অস্বাভাবিক। কিন্তু সেই অস্বাভাবিকতার কারণ কী?
একদিন, এ প্রশ্নই ডাক্তার করে অম্লানকে? কী এমন আছে, যার জন্য পৃথিবীটা এমন হয়ে গেল? আপনি তাঁকে কোনওদিন স্বপ্নে দেখেছেন?
অম্লান মাথা নাড়ে। বলে, দেখেনি সে। তাকে দেখেনি। তারপর খানিকটা হতোদ্যম হয়েই বলে, তাকে বোধহয় দেখা যায় না। কিন্তু আমরা মানুষরাই তাকে এনে ফেলেছি। আমাদের লোভ, আমাদের অনাচার, জেদ – আমাদের ক্ষমতার গর্ব তাকে ডেকে এনেছে।
বিড়বিড় করে এসবই বলে যায় অম্লান। শুনে ডাক্তার তাঁর প্রয়োজনীয় নোট নিতে থাকেন। আর, উমা মনে মনে ভাবে চাঁদ বেনের ক্রোধ, জেদের কথা। গোপনে সনকার মনসাপুজোয় রুষ্ট হয়ে হওয়ার কথা। আর, তার দরুণ সব ছারখার হয়ে যাওয়া। শুধু এই ভেবে সে আশ্বস্ত হয় যে, একদিন না একদিন বেহুলাই জয়ী হয়েছিল। আবার প্রাণ এসেছিল মৃত লখিন্দরের শরীরে। যদিও বিনিময়ে বেহুলাকে কম কষ্ট ভোগ করতে হয়নি।
উমা জানে, কষ্ট তার হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু একদিন অম্লান একটা সুস্থ পৃথিবীর স্বপ্ন ঠিক দেখবেই। উমার প্রেমই অম্লানকে এই মৃত্যু-মৃত্যু স্বপ্নের অসুখ থেকে আরোগ্যময় জীবনের কাছে ফিরিয়ে দেবে।
আর দিনকয় পর সত্যিই একদিন সারারাত চমৎকার ঘুমোল অম্লান। একবারও জাগল না। তারপর আরও কয়েকদিন। পরপর। একসময় উমা বুঝল যে-দুঃস্বপ্নের ভিতর অম্লান বাস করছিল, এতদিনে তা কোনোভাবে কেটে গেছে। আরোগ্য পেয়েছে অম্লান। এ কি চাট্টিখানি ব্যাপার! জনে জনে সে তাই ফোন করে বলছে, সেরে উঠেছি। সেরে উঠেছি। একদম সেরে উঠেছি। এবার আমরা বেড়াতে যাব… দেখো, এবার নিশ্চয়ই সমুদ্রে যাব…
অম্লানের দুঃস্বপ্ন বা উমার প্রেমের গল্পটার এখানেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে, এইখান থেকেই সে শুরু হল। এইভাবে-
অম্লানের টানা গোঙানি শুনে ধড়মড়িয়ে উঠে বসে উমা। বলে, কী বলছ পাগলের মতো? এত রাতে কোথায় যাবে?
ধাক্কায় ঘুম ভাঙে অম্লানও। কিন্তু ঘোর যেন কাটেনি তার। তখনও সে যেন অস্পষ্ট গোঙানির স্বরে বলছে, সেরে উঠেছি উমা… আমরা সমুদ্রে যাব…
-কীসের কী সেরে উঠেছ? আর, সমুদ্রে যাব মানে?
-কেন? যেতে পারব না?
উমা গ্লাসে জল ঢেলে অম্লানের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বলে, কী যে হাবিজাবি স্বপ্ন দেখো বাপু বুঝি না। বাইরে যাবে কী করে, এখন লকডাউন চলছে না!
The post লকডাউনের গল্প: অসুখ – সরোজ দরবার appeared first on Sangbad Pratidin.