সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিন্ধু জলচুক্তিতে সংশোধন দিল্লির পুরনো দাবি। দুই দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদীর সিংহভাগ জল ব্যবহার করে পাকিস্তান। পাশাপাশি ভারতের নদীবাঁধ দেওয়া নিয়েও ইসলামাবাদের প্রবল আপত্তি। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নালিশ জানানো পাক কূটনৈতিক কৌশল হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় নতুন করে সিন্ধু জলচুক্তি সংশোধনের দাবিতে পাকিস্তানকে কড়া নোটিস পাঠাল ভারত। সমস্যা কোথায়?
৯ বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না পাকিস্তান। অথচ কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে ভারত জল আটকে দিচ্ছে বলে ২০১৬ সালে অভিযোগ করে পাকিস্তান। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতেরও দ্বারস্থ হয় তারা। ভারতের অভিযোগ, এই একতরফা পদক্ষেপ আদতে সিন্ধু জলচুক্তির নবম ধারার লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই ৩০ আগস্ট, ২০২৪-এ নতুন করে চুক্তি সংশোধনের নোটিস পাঠাল নয়াদিল্লি।
১৯৬০ সালের চুক্তি মতে শতদ্রু, বিপাশা, রবি নদীর জল ব্যবহার করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ভারতের। সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার অধিকাংশ জলের ভাগ পেয়েছে পাকিস্তান। তবে ওই নদীগুলিতে শর্তসাপেক্ষে বাঁধ তৈরি করতে পারে ভারত (India)। সেইমতো জম্মু-কাশ্মীরে ঝিলম নদীতে কিষেণগঙ্গা ও চন্দ্রভাগায় রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভারত। আর এতেই প্রবল আপত্তি ইসলামাবাদের। পড়শি দেশটির অভিযোগ, কিষেণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্পের নকশায় ত্রুটি রয়েছে। ফলে সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। বিষয়টি মেটাতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে সালিশি আদালত গড়ার আরজি জানায় পাকিস্তান। অন্যদিকে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞকে দিয়ে প্রকল্পের নকশা পরীক্ষা করানোর আরজি জানায় ভারত। শেষ পর্যন্ত অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নয়াদিল্লি অনুমতি পায়।
উল্লেখ্য, চুক্তি অনুযায়ী ১৬.৮ কোটি একর-ফিট জলের মধ্যে ৩.৩ কোটি একর-ফিট জল পাবে ভারত। বর্তমানে প্রাপ্য জলের ৯০ শতাংশের সামান্য বেশি ব্যবহার করে থাকে সীমান্তবর্তী একাধিক রাজ্য। এছাড়াও চাষের প্রয়োজনে জলসেচের জন্য ঝিলম, সিন্ধু এবং চেনার নদীর ৩.৬০ একর -ফিট জল ধরে রাখতে পারে ভারত। যদিও জম্মু ও কাশ্মীরে সেই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। এর পরেও ইসলামাবাদের একাধিক আপত্তি নিয়ে বিরক্ত ভারত নতুন করে নোটিস পাঠাল।