ইংল্যান্ড ২৮৭ ও ১৮০
ভারত ২৭৪ ও ১১০/৫ (কোহলি ৪৩, কার্তিক ১৮, ব্রড ২/২৯)
ভারতের জিততে আর চাই ৮৪ রান, হাতে উইকেট ৫
গৌতম ভট্টাচার্য: এজবাস্টন জুজু তাড়াতে হলে হাতের পাঁচ উইকেট নিয়ে ৮৪ তুলতে হবে ভারতকে। কোহলি ৪৩ ব্যাটিং বলে ভারতীয় সমর্থকও নিশ্চয়ই আসবেন। নইলে শনিবারের সকালে আর কে ২৯ পাউন্ড খরচ করে দুঃখ পেতে চায়!
[ রুটকে আউট করে সেলিব্রেশনে বিশেষ বার্তা বিরাটের, ভাইরাল ভিডিও]
টার্গেট স্কোর হওয়ার কথা ছিল ১৫০। বা তারও কম। ১৯৪ দাঁড়ানোতেও পাত্তা দেওয়ার কী আছে? বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ, যাদের দাপটে টিম পয়লা নম্বর র্যাঙ্কিংয়ে এসেছে। তাদের কাছে এটা কী আর টোটাল! মাঠের ধারে এক ভারত সমর্থক বব উইলিসের সঙ্গে সেলফি তুলছিলেন। ওই ছবি তোলার ফাঁকে টুক করে যোগ করে দিলেন, ‘জিতছি। কী বলেন?’ উইলিস কিছু না বলে এগিয়ে গেলেন। তাঁর সঙ্গে হাঁটছিলেন স্কাই টিভির প্রোডাকশন অ্যাসিসট্যান্ট। তিনি পিছন ফিরে তিক্ত ভাবে বললেন, ‘ইন্ডিয়া এত রান ইংল্যান্ডে কখনও ফোর্থ ইনিংসে করেছে তো?’ প্রেসবক্সে উঠে চেক করে দেখলাম লোকটির পর্যবেক্ষণ অভ্রান্ত। ভারত কখনও এত রান এ দেশের চতুর্থ ইনিংসে করেনি। ওভালের ৭১-এ করেছিল ১৭৪ ছ’উইকেটে। কেঁদে কুকিয়ে জেতা। এরপর ৮৬-তে অত শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও মাত্র ১৩৫ রান তুলতে ৬ উইকেট চলে যায়। কাজেই এখানেও শেষ দিনের ৮৪ সহজ হবে না।
একটা টেস্ট এখনও শেষ হল না। খেলা হয়েছে মাত্র তিন দিন। তাতেই বিলেতের পরিবেশে ভারতীয় ব্যাটিং জুম করা ছবির মতো এত পরিষ্কার ভেসে উঠেছে যে আন্ডার ৪’১০ হাইটে টুর্নামেন্ট খেলা পল্টুও বলে দেবে, পুরোটা কোহলির উপর। ও খেললে রানটা হবে। না হলে নয়। কোহলির ব্যাটিং নিয়ে অদ্ভুত সব স্ট্যাটস শুনছিলাম। অলরেডি এই টেস্টে যা রান করেছেন, চার বছর আগের গোটা সিরিজে করেননি। যত বল দু’ইনিংস মিলিয়ে খেলে ফেলেছেন, ততগুলো বলও আগের সিরিজে খেলা হয়নি। নাসের হুসেন-হর্ষ ভোগলে আবার একটা পরিসংখ্যান দিলেন। প্রথম ইনিংসে কোহলি মোট ৪০ ডেলিভারি ছেড়েছেন অফ স্টাম্পের বাইরে। এর মধ্যে ২৬ ডেলিভারি অ্যান্ডারসনের বলে। এর চেয়েও অবশ্য ইন্টারেস্টিং, ১৪৯ করার ফাঁকে রশিদ থেকে ব্রডের বিরুদ্ধে তাঁর স্ট্রাইক রেট ভ্যারি করেছে ৭৮ থেকে ৮৯। অথচ অ্যান্ডারসনের বলে সেটা মাত্র ২৮। কী অসামান্য ভাবে উচ্চতর ব্যাটিং শৃঙ্গে পৌঁছবার লক্ষ্যে ভারত অধিনায়ক নিজের ইগোটা দুমড়ে-মুচড়ে বেসক্যাম্পের বেডিংয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস চলতে চলতেই দু’টো সমস্যায় আক্রান্ত ভারতীয় শিবির। এক, পরের টেস্টে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কাকে ছেড়ে কাকে বসাব? দুই, বিপক্ষকে এই যে জানিয়ে দিলাম তোমাদের দশ উইকেট নিছক রেকর্ডের জন্য নিতে হবে। আসলে একটা স্পেশ্যাল উইকেট নিলেই তোমাদের চলবে। এটা তো একটা আগাম আত্মসমর্পণ হয়ে যাচ্ছে। রবিচন্দ্রণ অশ্বিনকে আট থেকে ছয় নম্বরে প্রোমোশন দিয়ে দিনের শেষে একটা ঘোড়ার চাল দিয়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। খেটে গেলে জমে যেত। অশ্বিনের জীবন শুরু ব্যাটসম্যান হিসেবে। টেস্টে চার সেঞ্চুরিও আছে। কিন্তু সুইংয়ের এমন আদর্শ পরিবেশে ডিউক বলের ক্রমাগত বাঁক খাওয়ার গোলার্ধে অবশ্যই সেই রানগুলো করা হয়নি।
টেস্ট ম্যাচটা যে ভারতের জন্য উর্বর সমতল ভূমি থেকে অকস্মাৎ খাদে গড়িয়ে এলো, এমন ইঙ্গিতই ছিল না। বরং সকালে অশ্বিন এমন ভাবে শুরু করেছিলেন যেন একা টিম ইন্ডিয়াকে জিতিয়ে দেবেন। দু’ইনিংস মিলিয়ে তাঁর ১৩৪ রানে সাত উইকেট এ দেশে ভারতীয় স্পিনারের সেরা চার কীর্তির মধ্যে থাকবে। কিন্তু টেস্ট জেতাতে সমর্থ হবে কি? রোদ্দুর থাকলে ভারতের চান্স। সকালটা মেঘলা হয়ে বল বেশি বাঁক খেলে ইংল্যান্ড।
দেখুন ভিডিও:
[ ‘বন্ধুত্বের খাতিরে’ ইমরান খানের শপথগ্রহণে যাচ্ছেন কপিল দেব-সিধু]
The post এজবাস্টনের জুজু তাড়াতে কোহলির চাই শনিবাসরীয় খটখটে রোদ্দুর appeared first on Sangbad Pratidin.