সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ইউক্রেনে যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) জেরে রাশিয়ার (Russia) উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি। এই পরিস্থিতিতেও মস্কোর থেকেই তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে নয়াদিল্লি। তবে এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার থেকে সস্তায় তেল কেনার চেষ্টা করছে ভারত। যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে ১০৫ ডলার প্রতি ব্যারেলে তেল বিক্রি হচ্ছে, সেখানে রাশিয়ার থেকে ৭০ ডলারেরও কম দামে তেল কিনতে চাইছে।
আসলে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার থেকে তেল কেনা ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে আন্তর্জাতিক তেল রপ্তানি সংস্থা OPEC-এর সদস্য় দেশগুলির (ইরান, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব-সহ আরও বহু দেশ) সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও ‘বন্ধু’ রাশিয়ার থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবেই ওই ছাড় চাইছে ভারত। এমনটাই দাবি সূত্রের।
[আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধি রুখতে ৩ বছর বাদে রেপো রেট বাড়াল রিজার্ভ ব্যাংক, ধস শেয়ার বাজারে]
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সেই সময় থেকে এযাবৎ রাশিয়ার থেকে ৪ কোটি ব্যারেল তেল কিনেছে ভারত। পুরো ২০২১ সাল জুড়ে নয়াদিল্লি মস্কোর থেকে যে পরিমাণ তেল কিনেছে, ইতিমধ্যেই ২০ শতাংশ বেশি তেল কিনে ফেলেছে ভারত। এমনটাই জানা যাচ্ছে ব্লুমবার্গের সূত্রে।
ব্যবসায়ী মহলের মতে, মধ্য প্রাচ্য থেকে তেল কেনা অতটা লাভজনক নয়। কারণ সেখানে ছোট জাহাজে করে তেল রপ্তানি করা হয় এবং অনেক বেশি সময় লাগে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশগুলি রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। ফলে রাশিয়ার তেল বিক্রির বাজার কমেছে। চিনে ফের কোভিডের প্রকোপ বাড়ার ফলে সেখানেও জ্বালানির দাবি আপাতত কমেছে। এমতাবস্থায় কিছুদিন পরে রাশিয়া তেলের দাম আরও কমিয়ে দেবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের। প্রসঙ্গত, ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছিলেন, জাতীয় স্বার্থ বজায় রাখতে যে কোনও পদক্ষেপ করা যেতে পারে। এরপরে তেল সংস্থাগুলির এই সিদ্ধান্তে পরিষ্কার, মার্কিন হুমকিতেও নিজের অবস্থানে অটল ভারত।
[আরও পড়ুন: ‘ভারত বিরোধীদের সঙ্গেই রাহুল গান্ধীর বন্ধুত্ব কেন?’, নাইট ক্লাব নিয়ে ফের খোঁচা বিজেপির]
বহুদিন ধরেই রাশিয়া থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে ভারত। তার মধ্যে রয়েছে অশোধিত তেলও। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ভারতকে (India) প্রয়োজনমতো জ্বালানি রপ্তানি করতে পারে আমেরিকা। কিন্তু রাশিয়ার থেকে কম দামে তেল পাওয়া অত্যন্ত সুবিধাজনক এবং লোভনীয়ও বটে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে লাফিয়ে বেড়েছে তেলের দাম। এহেন পরিস্থিতিতে সস্তায় তেল কিনে নেওয়ার পক্ষপাতী ভারতীয় তেল শোধনাগারগুলি।