অস্ট্রেলিয়া- প্রথম ইনিংসে ২৬০ অলআউট, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৫ অলআউট (স্মিথ ১০৯, অশ্বিন ১১৯/৪)
ভারত- প্রথম ইনিংস ১০৫ অলআউট, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭ অলআউট (পূজারা ৩১, স্টিভ ও’কিফ ৩৫/৬)
অস্ট্রেলিয়া জয়ী ৩৩৩ রানে
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০৫ ও ১০৭। দুই ইনিংস মিলিয়েও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের রানটাই টপকাতে পারলেন না ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ছ’উইকেট নিলেন স্টিভ ওকিফ। যে কারণে ৪৪১ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১০৭ রানে গুটিয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া। সেই সঙ্গে ঘরের মাঠে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হার ৩৩৩ রানে।
শনিবার পুণের ঘূর্ণিপিচে কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের কাছেই অজি স্পিনযুগলের জন্য কোনও উত্তর ছিল না। মুরলি বিজয় থেকে বিরাট কোহলি-চেতেশ্বর পূজারারা ক্রিজে এলেন আর ফিরে গেলেন। অথচ এদিন সকালে এই পিচেই শতরান করেছিলেন অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। ১১টি চারের সাহায্যে ১০৯ রান করেন তিনি। কিন্তু নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় সেই রানটাও টপকাতে পারলেন না বিরাটরা। শেষ পর্যন্ত সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়তে হল তাঁদের। সেই সঙ্গে ভেঙে গেল টানা ১৯টি টেস্ট ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই প্রায় একহাত করে ঘুরছিল বল। অজিদের প্রথম ইনিংসে ২৬০ রানে বেঁধে রাখলেও, নিজেদের খোঁড়া কবরেই সমাধিস্থ হয় ভারত। ওকিফের ছ’উইকেটের দৌলতে মাত্র ১০৫ রানেই অলআউট হয় ভারত। মূলত পরিকল্পনামাফিক স্টিভ স্মিথ, ম্যাথু ওয়েডরা দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট করতে থাকেন। আর হাতে ছিল ১৫৫ রানের লিড।তাই ২৮৫ রানে অলআউট হলেও ভারতের সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৪১ রান। এই পিচে চতুর্থ ইনিংসে যা একপ্রকার দুঃসাধ্য। ভারতীয় দলের অতি বড় সমর্থকও হয়ত ভাবেননি এই রান তাড়া করে জিততে পারা যাবে। তবে বিরাটদের কাছ থেকে নূন্যতম লড়াইটুকুও যে পাওয়া যাবে না, সেটা হয়ত কেউই ভাবেননি।
ভারত ব্যাট করতে নামার পরেই দুই স্পিনারকেই আক্রমণে নিয়ে আসেন স্মিথ। যা হওয়ার তাই হল। মুরলি বিজয়কে ফেরালেন ওকিফ আর কে এল রাহুলকে ফেরালেন নাথান লিঁয়। দু’জনেই ডিআরএসের জন্য আবেদন করলেও রিভিউ তাঁদের আউট হওয়া থেকে বাঁচাতে পারেনি। বিজয়ের সংগ্রহ মাত্র ২। আর রাহুল করেন ১০ রান। এরপর চেতেশ্বর পূজারা এবং বিরাট পাল্টা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। প্রথম ইনিংসে শূন্য করার পর এই ইনিংসে ওকিফের বলে ১৩ রান করে বোল্ড হন বিরাট। এরপর অজিঙ্কা রাহানে এবং পূজারা কিছুটা চেষ্টা করেন। কিন্তু রাহানেকে ১৮ রানে ওকিফ প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দেওয়ার পর আর কেউ ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ২২.৩ ওভারে ভারতের রান যখন ৭৭, তখন আউট হন রাহানে। এরপর ৩৩.৫ ওভারে ১০৭ রানের মাথায় পড়ে ভারতের দশম উইকেট। অর্থাৎ মাত্র ৩০ রানে বাকি ছয় উইকেট পড়ে যায়। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান পূজারার। তিনি ৩১ রান করেন। ওকিফ (৩৫/৬)-এর পাশাপাশি সফল নাথান লিঁয়ও। তিনি ৫৩ রান দিয়ে চার উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে তৃতীয় দিনের শুরুতে চার উইকেটে ১৪৩ রান থেকে খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে মার্শ (৩১) ও পরে ম্যাথু ওয়েড (৩১)-কে সঙ্গে নিয়ে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যান অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। এর মধ্যেই নিজের ১৮ তম টেস্ট শতরানও পূর্ণ করেন তিনি। শেষপর্যন্ত ১০৯ রানে থামেন স্মিথ। যদিও এই ইনিংসে বেশ কয়েকবার তাঁর ক্যাচ ফেলেছে ভারতীয় ফিল্ডাররা। তবে তাতে তাঁর ইনিংসটিকে ছোট করার উপায় নেই। বরং ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে তিনি উদাহরণ হয়ে থাকতেই পারেন। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি চারটি উইকেট পেয়েছেন। এছাড়া জাদেজা তিনটি, উমেশ যাদব দু’টি এবং জয়ন্ত যাদব একটি উইকেট পেয়েছেন।
The post পুণের মাঠে ‘বিরাট’ লজ্জা ভারতের appeared first on Sangbad Pratidin.