shono
Advertisement

‘অঘটন না ঘটলে আজ কোহলিরাই জিতছে’

দক্ষিণ আফ্রিকায় আজ ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস গড়ার দিন। The post ‘অঘটন না ঘটলে আজ কোহলিরাই জিতছে’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:30 AM Feb 24, 2018Updated: 04:01 PM Sep 16, 2019

দীপ দাশগুপ্ত: ভারতীয় ক্রিকেটে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখটা বহু বছর পরেও ঐতিহাসিক হয়ে থাকতে পারে।

Advertisement

কেন? না, কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে আজ একইসঙ্গে ইতিহাস গড়তে পারে ভারতের মহিলা ও পুরুষ ক্রিকেট দল। প্রথমে হরমনপ্রীত কাউরের ভারত। তারপর বিরাট কোহলির ভারত। দুই ভারতীয় ক্যাপ্টেনের টিমই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বার ‘ডাবল’ সিরিজ জিততে পারে। ভারতের মহিলা দল এই সফরে আগেই ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছে। চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ এগিয়ে। কোহলিরা ওয়ান ডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫-১ গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ দাঁড়িয়ে। যার মানে হরমনপ্রীতরা শনিবার শেষ ম্যাচ হারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ অন্তত ড্র রাখতে পারবে। কিন্তু কোহলিররা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের শেষ ম্যাচ হারলে একইসঙ্গে সিরিজও হাতছাড়া। ‘ডাবল’ করা হবে না। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হচ্ছে, শনিবার কেপটাউনে ভারত দু’টো ম্যাচেই ফেভারিট। মহিলা টিমের বোলিং ডিপার্টমেন্টে অভিজ্ঞ ঝুলন গোস্বামী চোটের জন্য না থাকলেও মিতালি রাজ, স্মৃতি দক্ষিণ আফ্রিকায় আজ ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস গড়ার দিন।

ডুমিনি-মিলারদের বিরুদ্ধেও বিরাট কোহলিদের জয় ছাড়া আমি কিছু দেখছি না। বিশেষ করে যদি পুরো ম্যাচ হয়। দেখুন, সেই ওয়ান ডে সিরিজ থেকে ভারত যে দু’বার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ হেরেছে, দু’টোই বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ। ওয়ান ডে—টায় রিভাইসড টার্গেট তাড়া করে ওরা জিতেছিল। দু’দিন আগে সেঞ্চুরিয়নে ওদের ইনিংসে অর্ধেকের বেশি সময় ভিজে বলে বোলিং করতে হয়েছে ভুবনেশ্বর-চাহালদের। গ্রিপিংয়ের সমস্যা নিয়ে বল করতে হয়েছে। তাই আশা করব কেপটাউনে বৃষ্টির থাবা থেকে বেঁচে ম্যাচটা পুরো হবে।

[মার্চের মধ্যেই নতুন রূপে ইডেনের ক্লাব হাউস, কাজের তদারকিতে সৌরভ]

কেপটাউনেই বিরাটরা লম্বা দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শুরু করেছিল। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে এক ডজন ম্যাচের শেষটাও করছে সেই শহরে। আর কী অদ্ভুত বিপরীত আবহে! কেপটাউন আর সেঞ্চুরিয়নে প্রথম দু’টো টেস্টেই সিরিজ হেরেছিল ভারত। কিন্তু তারপর থেকে সফর বিরাটদের শুধু ভাল নয়, দারুণ ভাল চলছে। জো’বার্গে তৃতীয় টেস্টে জয়। তারপর ওয়ান ডে-তে ছ’টার মধ্যে পাঁচটায় বাজিমাত। টি-টোয়েন্টির স্কোরলাইন আপাতত ১-১। তাই শনিবারের ম্যাচটার গুরুত্ব ভারতের কাছে বেশি। যদি বিরাটরা জেতে, তা হলে সফরের অ্যাসেস যখন হবে, সবাই বলবে ভারত তিনটে সিরিজের দু’টোয় জিতেছে। টেস্ট সিরিজ হারলেও ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টি জিতেছে। কিন্তু যদি শনিবার বিরাটরা হেরে যায়, তা হলে হিসেবটা উল্টে যাবে। তখন বলবে, বিরাটরা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনটে সিরিজের দু’টোয় হেরেছে। জিতেছে একটা। যদিও মনে হচ্ছে বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে সেটা হবে না।

কেপটাউনে সাধারণত জোরে বোলারদের জন্য কিছু না কিছু থাকে। বিশেষ করে রাতের দিকে ফ্লাডলাইটে পেসররা সাহায্য পায়। তাই বুমরাকে আজ খেলতে দেখব বলে মনে হচ্ছে। বুমরার স্টিফনেস ছিল। সেজন্য আগের ম্যাচে খেলেনি। কিন্তু এটায় হয়তো খেলবে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, চাহালকে বসিয়ে কি কুলদীপ যাদবকে খেলানো উচিত শেষ টি-টোয়েন্টিতে? যেখানে আগের ম্যাচে চার ওভারে ৬৪ রান দিয়েছে চাহাল! উত্তরে বলব ‘না’। একটা ম্যাচে চাহাল মার খেয়ে গিয়েছে মানে ওর কোনটা লেগস্পিন, গুগলি, বা ফ্লিপার দক্ষিণ আফ্রিকানরা বুঝে ফেলেছে ভাবাটা ভুল। সবার একটা খারাপ দিন যেতে পারে। আরও একটা ব্যাপার, এই ভারতীয় দল এক-একটা ফরম্যাটে এক-একটা সেট প্যাটার্ন নিয়ে খেলতে বিশ্বাসী। দলও গড়ে সেভাবে। যেমন কুলদীপ ওয়ান ডে সিরিজে অত ভাল বল করা সত্ত্বেও টি-টোয়েন্টি টিমের প্যাটার্নে নেই। তাই শেষ টি-টোয়েন্টিতেও চাহালের জায়গায় কুলদীপকে খেলানো হবে বলে আমার মনে হয় না।

[ধোনি-রাজ জলে গেল চাহালের চার ওভারে]

দু’দিন আগের সেঞ্চুরিয়ন ম্যাচের বিচারে পরের আলোচনার বিষয় অবশ্যই মহেন্দ্র সিং ধোনি। সেদিন ভিনটেজ এম এসের ব্যাটিংয়ে যেটা সবচেয়ে ভাল ব্যাপার ছিল, বহু দিন বাদে ওর ব্যাট থেকে বিগ সিক্স দেখতে পাওয়া। দু’টো শটের কথা তো সবার বহু দিন মনে থাকবে। একটা স্মুটসকে স্টেপ আউট করে মারা ওভার বাউন্ডারি। অন্যটা পেসারকে ব্যাকফুটে কভারের ওপর দিয়ে বাইরে ফেলা। ছত্রিশ বছরেও কতটা ফিটনেস, পাওয়ার আর শটের টাইমিং ঠিক থাকলে একজন ব্যাটসম্যান এমন মারতে পারে! ধোনির ইনটেনসিটি কতটা বেশি ছিল, সেটা সিঙ্গলস নেওয়ার সময় নন-স্ট্রাইকার মণীশ পাণ্ডেকে বকুনি দেওয়ার মধ্যে পরিষ্কার। মণীশ সামান্য আনমনা হয়ে পড়েছিল এক-কে দুই করার সময়। ধোনি এমন কড়া ভাবে সতর্ক করেছে, যে কথাটা স্টাম্প মাইক্রোফোনে ধরা পড়েছে।

তারপরেও বলব, ধোনিকে মনে হয় না ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে দেখব। এই দলের সেই সেট প্যাটার্ন অব প্লেয়িং স্টাইল। নির্দিষ্ট দর্শন এবং সেটার প্রতি ম্যাচের যে কোনও অবস্থায় বিশ্বাস রাখার বৈশিষ্ট্য। তা ছাড়া, কুড়ি ওভারের ইনিংসে ফোর্থ ডাউন ধোনির থেকে ফের একটা ধামাকা ইনিংসের দরকার পড়ে, তা হলে ভারতের পক্ষে সেটা সুবিধের হবে না নিউল্যান্ডসে। তার চেয়ে আশা করব, শিখর-রোহিত-কোহলির টপ অর্ডার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ডেলিভারি দেবে। রোহিত আগের ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শূন্য করার খারাপ রেকর্ড করুক, সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। রোহিত প্রথম বলেই আউট। আর কোনও ব্যাটসম্যান নেমেই প্রথম ডেলিভারি ভাল পেলে তার দুর্ভাগ্য। বরঞ্চ ১০-১৫টা বল ভাল খেলে আউট হলে চিন্তার ছিল। রোহিত ছোট ফরম্যাটে ম্যাচ উইনার। ভারতের টপ অর্ডারে তিন-চারজনের মধ্যে দু’জন খেললে দু’শো ওঠা নিশ্চিত।

The post ‘অঘটন না ঘটলে আজ কোহলিরাই জিতছে’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement