সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাবেরী নদীর জলবণ্টনকে কেন্দ্র করে ফের অশান্তি কর্নাটকে (Karnataka)। তামিলনাড়ুকে (Tamil Nadu) বেশি জল দেওয়ার প্রতিবাদে এবার ১২ ঘণ্টা বেঙ্গালুরু (Bengaluru) বনধের ডাক দিল বিক্ষোভকারীরা। ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা অবধি বনধের ডাক দিয়েছে রাজ্যের কৃষক সংগঠন এবং কন্নড়পন্থী একাধিক গোষ্ঠী।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর কাবেরী জলবণ্টন নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আরও পনেরো দিন তামিলনাড়ুকে ৫ হাজার কিউসেক জল দেবে কর্নাটক। যদিও তামিলনাড়ুর তরফে দাবি করা হয়েছিল ১২ হাজার ৫০০ কিউসেক জলের। এ বিষয়ে জলবণ্টন কমিটির এক আধিকারিক জানান, বৈঠকে কর্নাটকের পক্ষ থেকে ৩০০০ কিউসেক জল দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যেখানে তামিলনাড়ুর পক্ষ থেকে ১২,৫০০ কিউসেক জলের দাবি রাখা হয়েছিল। এরপর দুপক্ষের মধ্যে ৫০০০ কিউসেক জল নিয়ে চুক্তি হয়। যা আগামী আরও পনেরো দিন তামিলনাড়ুকে দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: রাজস্থান বিধানসভায় আদৌ জিতবে কংগ্রেস? সংশয়ে খোদ রাহুল গান্ধীই]
এই সিদ্ধান্তেও আপত্তি তুলেছে কর্ণাটকের কৃষকরা। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুকে বেশি জল দেওয়ার প্রতিবাদে ২৬ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরু বনধের ডাক দিয়েছে তারা। ওই দিন শহরে অটো, অ্যাপ ক্যাব বন্ধ থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যেহেতু চালক সংগঠনগুলো কৃষকদের দাবিকে সমর্থন করেছে। বিক্ষোভকারীরা স্কুল, কলেজ, আইটি সংস্থাগুলিকে ওই দিন ছুটি ঘোষণার জন্য অনুরোধ করেছে। রাজ্য সরকারের কাছে বিশেষ বিধানসভা অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন কৃষকনেতা কুরুবুরু শান্তাকুমার। বনধের দিন বেঙ্গালুরুতে বিরাট মিছিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও কর্নাটক স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে বাস নামানো হবে। অর্থাৎ তেমন তেমন অবস্থায় বাসও বনধও থাকতে পারে।
[আরও পড়ুন: বাস্তবের ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে দিলেন যুবক]
গত আগস্ট মাসেই কাবেরীর জলবণ্টন (Cauvery Water Management) নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কাবেরী জল ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে রিপোর্ট তলব করে। এর পরই কমিটির তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, ১৫ দিন তামিলনাড়ুকে প্রতিদিন ৫০০০ কিউসেক জল দেওয়া হবে। কমিটির এই সিদ্ধান্তের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে কন্নর কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, তামিলনাড়ুকে বেশি জল দেওয়া হলে তার প্রভাব পড়বে রাজ্যে। চাষবাসের ক্ষতি হবে। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কর্নাটকের মান্ড্য জেলা। রাতভর সেখানে বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা।
উল্লেখ্য, কাবেরীর জলবণ্টন নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে বিবাদ বহুদিনের। এর আগেও কাবেরী নদীর জল ছাড়া নিয়ে শীর্ষ আদালতের দারস্থ হয়েছিল তামিলনাড়ু। নদী কারও একার নয়। কোনও রাজ্য নদীর জলের অধিকার একা নিতে পারে না। ২০১৮ সালে কাবেরী নদীর জলবণ্টন মামলা নিয়ে এমনই রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।