সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা অতিমারির পর বড় ছেলে সরকারি চাকরি পাওয়ায় আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল বিহারের এক ছোট পরিবারের। সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তামুক্ত হয়েছিলেন সরকারি পরীক্ষায় পাশ করা অমিত কুমার। সেই সময়টা ছিল ২০২২। মাঝে কেটে গিয়েছে দুবছর। জীবনে বদলে গিয়েছে অনেকখানি। এখন সংসার চালাতে জোম্যাটোর ডেলিভারি বয় হিসাবে কাজ করতে হয় তাঁকে। শিক্ষকতার পাশাপাশি আয় বাড়াতে অতিরিক্ত কাজ করেন অমিত।
এই ঘটনা বিহারের ভাগলপুরের। প্রথমে এক বেসরকারি স্কুলে পড়াতেন অমিত। কিন্তু করোনার সময় তাঁর সেই চাকরি চলে যায়। প্রায় আড়াই বছর বেকার থাকার পর ২০২২ সালে সরকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। শারীরশিক্ষার শিক্ষক হিসাবে কাজের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু তাঁকে মাত্র ৮ হাজার টাকার বেতনের পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। এই টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল অমিতকে। কিন্তু চলতি বছরের শুরুর চার মাস কোনও বেতন পাননি অমিত-সহ ওই স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকরা। যে কারণে বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করতে হয় তাঁকে। দিন দিন সেই ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পড়েন অমিত।
এই সময়ই রোজগারের অন্য পথ খুঁজে বের করতে ফুড ডেলিভারি সংস্থায় কাজ করার পরামর্শ দেন অমিতের স্ত্রী। খোঁজখবর নিয়ে অমিত জানতে পারেন ফুড ডেলিভারির কাজে নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশিই এই কাজ তিনি করতে পারবেন। সময় নষ্ট না করে অমিত জ্যোমাটোয় কাজের আবেদন জানান করেন। সেখান থেকেই ফুড ডেলিভারি এজেন্টের কাজ পান তিনি। বর্তমানে স্কুল ছুটি হতেই জ্যোমাটোর জামা গায়ে চাপিয়ে নেন অমিত। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খাবার ডেলিভারি করেন। অমিতের কথায়, "গত আড়াই বছর ধরে একই বেতনে শিক্ষকতা করে চলেছি। অন্য শিক্ষকেরা যেখানে মাসে ৪২ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন, সেখানে আমার মতো পার্শ্বশিক্ষকেরা মাত্র ৮ হাজার টাকায় চাকরি করছেন। মাঝে মধ্যে এই বেতনও ঠিকমতো মেলেনা। এই টাকায় কি সংসার চলে?" কিন্তু হাজার প্রতিকূলতাতেও মনের জোর হারাননি অমিত। পেট চালাতে দুই কাজই হাসিমুখে করছেন অমিত।