সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হরিদ্বারে (Haridwar in Uttarakhand) ‘ধর্ম সংসদে’ গণহত্যার উসকানি। মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে বলা হল হিন্দু সম্প্রদায়কে। বিজেপি (BJP) ঘনিষ্ঠ ধর্ম সংসদের বক্তারা জানিয়েছেন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণার কথা তাঁরা ভেবেচিন্তেই বলেছেন। এদিকে ধর্ম সংসদের রুদ্ধদ্বার সমাবেশের বক্তব্যের ভিডিও (Video) প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একাধিক ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)। এদিকে বিতর্কিত ধর্মীয় সংসদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতা সাকেত গোখলে।
জানা গিয়েছে, ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বরে পুন্যভূমি হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই রুদ্ধদ্বার ধর্মীয় সংসদ। যেখানে উপস্থিত ছিলেন এই সংসদের অসংখ্য প্রতিনিধি। বিতর্কিত ধর্মগুরু যতি নরসিংহনন্দ (Yati Narasimhanand) যার মূল আয়োজক। এর আগেও একাধিকবার উসকানিমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক জড়ান তিনি। তবে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ তার চরম রূপ দেখল।
[আরও পড়ুন: স্বাধীনতার চেয়েও বড় রাম মন্দির আন্দোলন! বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতার মন্তব্যে বিতর্ক]
বিতর্কিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি, বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী উদিতা ত্যাগী এবং বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। একটি ক্লিপে দেখা যায় প্রবোধানন্দ গিরি বলছেন, “মায়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, সেনা, রাজনীতিবিদ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। এবার ‘সাফাই অভিযান’ চালাতে হবে।” অন্য একটি ক্লিপে পূজা শাকুন পান্ডে নামের এক বক্তা বলেন, “যদি ওদের সমূলে ধ্বংস করতে চান, তাহলে ওদের হত্যা করুন। আমরা এমন ১০০ জন যোদ্ধাকে চাই, যারা ওদের ২০ লাখ লোককে হত্যা করবে।” আরও একটি ক্লিপে স্বামী ধরমদাস মহারাজ বলেন, সুযোগ পেলে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে হত্যা করতেন। তাঁর কথায়, “যদি আমি সেদিন সংসদে উপস্থিত থাকতাম, যেদিন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, জাতীয় সম্পদের উপর সংখ্যালঘুদের প্রথম অধিকার, আমি নাথুরাম গডসেকে অনুসরণ করতাম। একটি রিভলবার দিয়ে ওঁকে ছ’ বার বুকে গুলি করতাম।”
এদিকে গোটা বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাইছেন দিল্লি বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তিনদিনের অনুষ্ঠানে আমি মাত্র একদিন ছিলাম। ৩০ মিনিট মঞ্চে ছিলাম। শুধুই দেশের সংবিধান নিয়ে বলেছি। আমার আগে এবং পরে কে কী বলেছেন, তার জন্য আমি দায়ী নই।”
[আরও পড়ুন: গোমাতাকে বাঁচাতে সঙ্গে তলোয়ার রাখুন, বিতর্ক উসকে হিন্দুদের পরামর্শ VHP নেত্রী সাধ্বীর]
তবে সংসদ ঘিরে যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই যতি নরসিংহনন্দ জানিয়েছেন, তিনদিনের সংসদের মূল আলোচ্য ছিল ২০২৯-এ দেশের মুসলিম প্রধানমন্ত্রী। এটা কোনও ভিত্তিহীন ভাবনা নয়। যতি নরসিংহনন্দ বলেন, “আমাদের আশপাশের পরিবেশ দেখলেই বুঝবেন, কীভাবে হিন্দু কমছে আর মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে। গত দুই দশক ধরেই আমি এই কথা বোঝানোর চেষ্টা করছি।”