সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সত্যি হল আশঙ্কা। বুধবার গভীর রাতে আছড়ে পড়ল ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'শুল্ক-বোমা'। রাশিয়াকে ছাড় দিয়ে চিন, ব্রিটেন-সহ নানা দেশের উপর কর চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই তালিকায় রয়েছে 'বন্ধু' ভারতও। নয়াদিল্লির উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প বলেছেন, "ওরা যা কর চাপায় এটা তার অর্ধেক। আমরা ছাড় দিয়ে শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণ করেছি।" তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই শুল্ক ঘোষণার দিনটিকে ট্রাম্প আগেই ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচন জিতে ফের আমেরিকার মসনদে বসেন ট্রাম্প। আর ক্ষমতায় ফিরেই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপিয়ে থাকে, ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যে পালটা তার উপযুক্ত শুল্ক চাপানো হবে। সেই মতোই গতকাল বুধবার ভারতীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ (আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টেয়)‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ, চিনে থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে হোয়াইট হাউস।
এই শুল্ক নিয়ে বিস্তারিত জানানোর সময়ই ট্রাম্প বলেন, "ছাড় রেখেই এই শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দেশগুলো যা কর চাপায় এটা তার অর্ধেক। আমরা ছাড় দিয়েই শুল্ক চাপিয়েছি।' কথা বলতে বলতে উঠে ভারতের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, "ভারতের শুল্কের পরিমাণ খুবই বেশি। তবে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমার খুব ভালো বন্ধু। সম্প্রতি তিনি আমেরিকা থেকে ঘুরেও গিয়েছেন। তখন আমি তাঁকে বলেছিলাম, শুল্কের ব্যাপারে আপনারা আমেরিকার সঙ্গে ঠিক করছেন না। ভারত আমাদের থেকে ৫২ শতাংশ কর নেয়। কিন্তু ছাড় দিয়ে তার অর্ধেক মানে ২৬% শুল্ক চাপাচ্ছি।"
এছাড়া এদিন ট্রাম্প চিনের উপর ৩৪%, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০%, ভিয়েতনাম ৪৬%, জাপান ২৪%, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫%, ব্রিটেন ১০%, থাইল্যান্ড ৩৬% এবং সুইজারল্যান্ডের উপর ৩১% শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, সোমবার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আনে আমেরিকা। সেখানে দেখানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকার দুগ্ধজাত দ্রব্যে ৫০ শতাংশ, জাপান আমেরিকায় উৎপাদিত চালে ৭০০ শতাংশ, ভারত আমেরিকার কৃষিজাত পণ্যে ১০০ শতাংশ, কানাডা আমেরিকার দুগ্ধজাত দ্রব্যে প্রায় ৩০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ইটের বদলা নিতে পাটকেল’ ছুড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর হোয়াইট হাউস জানায়, বিভিন্ন দেশের অতিরিক্ত শুল্কের কারণে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি হচ্ছে। যার জন্য জরুরী অবস্থার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।