সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশ যেন কোনওভাবেই সন্ত্রাসবাদের হিতৈষী হয়ে না ওঠে। স্পষ্টভাষায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে এমনটাই জানিয়ে দিল ভারত। হাসিনা সরকার পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের আমলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। পাকিস্তানের মদতেই সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশ বা (সার্ক)কে পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল বাংলাদেশ। তার প্রেক্ষিতেই এবার কড়া বার্তা দিল নয়াদিল্লি।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মলদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা, এই ৮ সদস্য দেশের সমষ্টিতে ১৯৮৫ সালে তৈরি হয়েছিল সার্ক। যার লক্ষ্য ছিল এই দেশগুলি, আভ্যন্তরীণ সহযোগিতা, শান্তি ও উন্নতির লক্ষ্যে একে অপরের সহযোগিতা করবে। তবে পাকিস্তানের লাগাতার সন্ত্রাস ও ২০১৬ সালে উরি হামলার পর সার্ককে নিষ্ক্রিয় করে ভারত। এবার পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে সেই সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে ওমানের মাসকটে 'ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সে' ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক হয় বাংলাদেশের বৈদেশিক উপদেষ্টা তৌহিদ হুসেনের। সেখানে সার্কের বৈঠক ডাকার জন্য নয়াদিল্লির কাছে সাহায্য চায় ঢাকা। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য এই কোনও মন্তব্য করেননি জয়শংকর। তবে সেখানে যে এই প্রস্তাব বাংলাদেশ রেখেছিল তা শুক্রবার স্পষ্ট করেন বিদেশমন্ত্রকের মুখমাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
শুক্রবার এই ইস্যুতে জয়সওয়াল বলেন, "মাসকটের বৈঠকে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব ভারতের কাছে রেখেছিল বাংলাদেশ। পুরো দক্ষিণ এশিয়া জানে সার্ক বাতিল করার নেপথ্যে কারা? সার্কের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে কোন দেশের কুকর্ম? আমাদের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদের হিতৈষী হয়ে না ওঠে। ভারতের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট, আভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ও শান্তির জন্য আবশ্যকভাবে যা জরুরি তা হল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।"
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকে অরাজকতা চরম আকার নিয়েছে বাংলাদেশে। মৌলবাদীদের নৃশংস হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে সেখানকার সংখ্যালঘুদের। এই ঘটনায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই পাকিস্তান প্রেম ব্যাপকভাবে জেগে উঠেছে বাংলাদেশে। দীর্ঘ বছর ধরে দুই দেশের বন্ধ থাকা বাণিজ্য শুরু হয়েছে নতুন করে। অভিযোগ, সন্ত্রাসকে ইন্ধন দিতে পাকিস্তান থেকে আনা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। মাথাচাড়া বাংলাদেশের বহু নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন। এসবের মাঝেই এবার বাংলাদেশকে কড়া বার্তা ভারতের।
