সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার অসমেও বিশেষ নিবিড় সংশোধন! সোমবার কমিশনের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা তাতে অবশ্য বলা হয়েছে, অসমে শুরু হচ্ছে 'বিশেষ সংশোধন' (Special Revision)। খাতায় কলমে এটি 'এসআর' হলেও বাস্তবে দেশের বাকি রাজ্যে চলা বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এর সঙ্গে এর কোনও ফারাক নেই। একই পদ্ধতি মেনে এই রাজ্যেও হবে ভোটার তালিকা সংশোধন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে তবে কি তৃণমূল-সহ বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে অসমেও এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হল কমিশন।
সোমবার কমিশনের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ১৮ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২২ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএলওদের ভেরিফিকেশন, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস ও ভোটার কার্ড সংশোধন। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ২৭ ডিসেম্বর। অভিযোগ জানানোর সময়সীমা ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২২ জানুয়ারি ২০২৬। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ১০ ফেব্রুয়ারি। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, 'এসআর'-এ ডি-ভোটার বা 'ডাউটফুল ভোটার'দের নাম ঠিকানা পরিবর্তন করা হবে না। ভোটার তালিকা থেকে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বা সংশ্লিষ্ট কোনও আদালতে নির্দেশিকা ছাড়া তাঁদের নাম মোছা হবে না।
উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর বাংলা-সহ ১২ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর শুরু হলেও বাদ রাখা হয়েছিল অসমকে। সেই সময় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সাংবাদিক বৈঠকে জানান, “সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে অসমে এনআরসি প্রায় শেষের পথে। এছাড়া উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যের নিজস্ব বিধানও রয়েছে। তাই এসআইআর প্রক্রিয়া থেকে অসমকে বাদ রাখা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “অসমের জন্য আলাদা করে নির্দেশিকা জারি করা হবে এবং পৃথক তারিখ ঘোষণা করা হবে।” অর্থাৎ অসমে এসআইআর যে হবে সে কথা আগেই জানিয়েছিল কমিশন। তবে সেক্ষেত্রে বাধা ছিল এনআরসি। কমিশনার জানিয়েছিলেন, এনআরসির ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিটা শেষ হলেই এসআইআর ঘোষণা হবে। এরপর এই ঘোষণার প্রশ্ন উঠছে, তবে কী এনআরসির যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে? সে উত্তর অবশ্য স্পষ্টভাবে মেলেনি।
এরইমাঝে দেশজুড়ে এসআইআর ঘোষণার মাত্র ২১ দিনের ব্যবধানে কমিশনের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ২৭ অক্টোবর বাংলা-সহ ১২ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর ঘোষণার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন অসমকে কেন এই তালিকা থেকে বাদ রাখা হবে। দেশের বাকি বিরোধীদলগুলিও এই ইস্যুতে একহাত নেয় কমিশনকে। সেই চাপের মুখেই এবার অসমে 'এসআর' ঘোষণা হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
