সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতি তিন দিনে একজন আধিকারিককে ছেঁটে ফেলেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)! সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে চমকে দেওয়া এই পরিসংখ্যান। জানা গিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Rail Minister Ashwini Vaishnaw) বলেছিলেন, রেলে কর্মরত আধিকারিকরা কেউ যদি দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকেন বা কাজে ফাঁকি দেন, তাঁদের বরদাস্ত করা হবে না। রেলকে দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্দেশ্যেই বড় সংখ্যক আধিকারিককে ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৩৯জন আধিকারিক ছাঁটাই হয়েছেন বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও এনেছে সিবিআই।
বুধবারই নতুন করে দু’জন আধিকারিকে বরখাস্ত করেছে রেল। তাঁদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে পাঁচ লক্ষ এবং অপর জনের বিরুদ্ধে তিন লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, সঠিক ভাবে কাজ করতে হবে নয়তো চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হবে। ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে প্রতি তিন দিনে একজন করে দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিককে রেলের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ষোলো বছর পর বেতন বাড়ল ৬০ টাকা! অস্থায়ী শিক্ষকদের ক্ষোভের মুখে মহারাষ্ট্র সরকার]
প্রশ্ন উঠছে, রেলের আধিকারিকদের কি এইভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়? তবে রেলের নিয়োগ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, তিন মাসের নোটিস দিয়ে কর্মীদের বরখাস্ত করা যাবে। বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো যেতে পারে কর্মীদের। অন্যদিকে, রেলমন্ত্রী পদে বসার পরেই কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন অশ্বিনী। বারবার করে তিনি বলেছেন, সঠিকভাবে কাজ না করলে ভিআরএস নিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে আধিকারিকদের। রেলের নানা দপ্তর থেকেই আধিকারিকদের ছেঁটে ফেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে বড় সংখ্যক আধিকারিকদের সরে যাওয়া প্রসঙ্গে আরেকটি মতও উঠে আসছে রেলের অন্দরে। জানা গিয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, যার জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা অবসর নিতে বাধ্য হন। ছাঁটাই হওয়া আধিকারিকের একাংশের নথিপত্রে এমনও লেখা হয়েছে, প্রোমোশন না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রেলের তরফেই। ফলে ঠিক কোন যুক্তিতে এতজন আধিকারিককে বরখাস্ত করে দেওয়া হল, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।