সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পুরোপুরি অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজ। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, দেশের সবচেয়ে পুরনো বেসরকারি বিমানসংস্থাকে বাঁচানোর যে শেষ চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটাও ব্যর্থ হয়েছে। সংস্থায় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখানো সংস্থা জালান-কালরক গোষ্ঠী জেট এয়ারওয়েজ অধিগ্রহণের শর্তপুরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সংস্থাটিকে ভেঙে দিয়ে সব সম্পত্তি নিলামের নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
ঋণের ভারে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে দেশের একসময়ের অন্যতম বড় বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ (Jet Airways)। ফলে প্রায় ২৫ বছর পর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যায় উড়ান। সংস্থার কর্ণধার নরেশ গোয়েলের বিরুদ্ধেও একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে কানাড়া ব্যাঙ্কের ৫৩৮ কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে সংস্থার নরেশকে গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এদিকে বিমান সংস্থা ততদিনে ঋণের দায়ে জর্জরিত। কর্মীদের বেতন, বিনিয়োগকারীদের বকেয়া সব মিলিয়ে সংকটের পরিস্থিতি। এরই মধ্যে ২০২০ সালে লন্ডনের সংস্থা কালরক ক্যাপিটাল জেট কিনতে আগ্রহ দেখায়। জালান গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কালরক ক্যাপিটাল জেট অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু করে। কর্মীদের বেতন-সহ সংস্থার যাবতীয় ঋণ মিটিয়ে নতুন করে জেটের উড়ান চালুর প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনাল বা এনসিএলটিতে সে কথা জানানো হয় জেটের তরফে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, যে শর্তে জালান-কালরক কনসোর্টিয়াম বিমান সংস্থাটি অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল, সেই শর্ত পূরণ হচ্ছে না। কর্মীদের বকেয়া বেতন পর্যন্ত মেটানো হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনাল জেটের অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুমতি দেয় জালান-কালরক কনসোর্টিয়ামকে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সেই সিদ্ধান্তের জন্য কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনালকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেছে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালার পর্যবেক্ষণ, সব তথ্য খতিয়ে না দেখেই কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনাল এই অধিগ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, জেট এয়ারওয়েজের লিকুইডেশন ছাড়া সংস্থার ঋণ পরিশোধের আর কোনও উপায় নেই। লিকুইডেশনের অর্থ সংস্থার আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। যাবতীয় সম্পত্তি বিক্রি করে বিনিয়োগকারী এবং কর্মীদের ঋণ মেটাতে হবে।