বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত ও অর্ণব আইচ: ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়কের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল লক্ষ লক্ষ টাকা। সেই মামলায় প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা এই ঘটনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উঠে আসে সিদ্ধার্থ মজুমদারের নাম। আজ, বুধবার দিল্লিতে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে যান বাংলার সিআইডি আধিকারিকরা। কিন্তু সেখানে পৌঁছতেই দিল্লি পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় সিআইডিকে। আদালতের তরফে তল্লাশি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও দিল্লি পুলিশ সিআইডিকে আটকে দেয়।
গত শনিবার হাওড়ার পাঁচলার কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধারকে ঘিরে ছড়ায় চাঞ্চল্য। তাঁদের (Congress MLA) গ্রেপ্তারির পর জেরা করছে সিআইডি। জেরায় জানা গিয়েছে, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জেএমএম-কংগ্রেস সরকার ফেলার জন্য বিজেপি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল কংগ্রেসের তিন বিধায়ককে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও তিনজনের সন্ধান পায় এ রাজ্যের সিআইডি টিম। আর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উঠে আসে সিদ্ধার্থ মজুমদারের নাম। তাঁর দিল্লির বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার জন্য আগেভাগেই দিল্লি পুলিশের সাহায্যও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব জেনেও বুধবার তদন্তে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়ায় দিল্লি পুলিশই!
[আরও পড়ুন: ‘নেহরু, বাজপেয়ীর নির্বুদ্ধিতাতেই তিব্বত, তাইওয়ান চিনের দখলে’, ফের বিস্ফোরক সুব্রহ্মণ্যম স্বামী]
জানা গিয়েছে, সিআইডির (CID) চার আধিকারিককে সাউথ ক্যাম্পাস পুলিশ স্টেশনে আটক করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকী তাঁদের বলা হয়, তল্লাশি শেষে যে লিখিত কাগজ জমা দিতে হয়, তা যেন তাঁরা জমা করে দেন। কিন্তু তল্লাশি না করেই এমন কোনও তথ্য জমা করতে রাজি হননি ওই আধিকারিকরা। এই পরিস্থিতির খবর পেয়ে বাংলা থেকে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা দিল্লি রওনা দিয়েছেন বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কেন তল্লাশি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও বাংলার সিআইডি আধিকারিকদের আটকাল দিল্লি পুলিশ, সে নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা তৈরি হয় বলে তাঁর দাবি। কুণাল ঘোষ বলেন, “দিল্লি পুলিশের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে বাংলার তদন্তকারীদের আটকানোর চক্রান্ত যে করা হচ্ছে না, সেটা তো বলা যাচ্ছে না।”
এদিকে, এই ঘটনায় যুক্ত আরেক ব্যবসায়ী সল্টলেকের বাসিন্দা মহেন্দ্র আগরওয়ালের অফিস থেকে গতকাল প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সঙ্গে মেলে ২২৫টি রুপোর কয়েনও। তারপর থেকেই তাঁকে খুঁজছিলেন সিআইডি আধিকারিকরা। এদিন তাঁর হদিশ মেলে। কিন্তু সিআইডি তাঁকে আটক করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আপাতত তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর।