সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রদ্রোহ আইন (Sedition Law) নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে এই আইন। কেন্দ্রীয় সরকার এই আইন পুনর্বিবেচনা করবে। সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, “কোর্টের আইনকে সম্মান করছি আমি। কিন্তু একটি লক্ষ্মণরেখা রয়েছে যেটা সকলের মেনে চলা উচিৎ।” তবে এই রায় ঠিক কিনা, সেই নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
১৬২ বছর পর প্রথম বার স্থগিত রাখা হল রাষ্ট্রদ্রোহ আইন। সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমাদের অবস্থান পরিষ্কার ভাবে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছাতেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আদালতের স্বাধীনতাকেও আমরা সম্মান করি।” এর পরেই তিনি বলেন, “তবে মনে রাখা দরকার, সব কিছুরই একটি লক্ষ্মণ রেখা আছে। সেই সীমা লঙ্ঘন করা উচিৎ নয়। সংবিধানের পাশাপাশি যে আইনগুলি রয়েছে সেগুলিকেও সম্মান করতে হবে।”
তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সরকার এবং আদালত উভয় পক্ষেরই একে অপরের প্রতি সম্মান থাকা উচিৎ। তিনি বলেছেন, “আমরা একে অপরকে সম্মান করি, আদালতের উচিত সরকার এবং লোকসভাকে সম্মান করা। সেই সঙ্গে সরকারেরও উচিত আদালতকে সম্মান করা। আমাদের কাজের স্পষ্ট সীমানা আছে এবং কোনও পক্ষেরই লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করা উচিত নয়।” আদালতের আজকের রায় নিয়ে স্পষ্টতই ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কী মনে করেন এই রায় ভুল? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি রিজিজু (Kiren Rijiju)।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের স্থগিতাদেশ নিয়ে টুইট করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি লিখেছেন, “সত্যি কথা বলা দেশভক্তি, দেশদ্রোহিতা নয়। সত্য কথা শোনাটাই রাজধর্ম। সত্যি কথাকে আটকে রাখা হল ঔদ্ধত্য। ভয় পেও না।”
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আপাতত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে কোনও এফআইআর দায়ের করা উচিৎ হবে না। আরও বলা হয়েছে, যদি রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা রুজু করা হয়, তাহলে অভিযুক্তরা তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যেতে পারে। যদি কারও নামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু হয়ে থাকে, তাহলে এখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। পাশাপাশি সেই মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতগুলিকে। ইতিমধ্যেই এই আইনের বলে যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।