সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পূর্ব পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া এক ব্যক্তিকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সুপারিশ করল সুপ্রিম কোর্ট। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার পঞ্চম বর্ষে এসে সিএএ মোতাবেক এই সুপারিশ। ইতিমধ্যে গোয়া, গুজরাট-সহ দেশের অন্যান্য প্রান্তে পাকিস্তান থেকে শরণার্থী হিসাবে ভারতে আসা বেশ কয়েকজন সংখ্যালঘুর হাতে তুলে দেওয়া হল ভারতীয় নাগরিকত্ব।
১৯৬৯ সালে বাবার হাত ধরে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে ১৬ বছর বয়সে ভারতে আসেন বাসুদেব দত্ত। ১৯৮৫ সালে পান রাজ্য সরকারের চাকরি। নিয়ম অনুযায়ী, চাকরি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ২৫ বছর বাদে ২০১০ সালে জমা দেন পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট। তা খতিয়ে দেখার পর ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে খারিজ করে দেওয়া হয় চাকরি। এরপর ট্রাইবুনাল, হাই কোর্ট ঘুরে তিনি আসেন সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ সেই নির্দেশ খারিজ করে কেন্দ্রের কাছে তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্বের সুপারিশ করেছে।
শুধু বাংলাই নয়। সিএএ-কে কাজে লাগিয়ে দেশজুড়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাচ্ছেন অনেকে। শুধু গুজরাটেই সাম্প্রতিক সময়ে ৫৫ জন ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। যার মধ্যে বুধবার এমন একজন নাগরিকত্ব পেলেন, যাঁর জন্ম ১৯৯৮ সালে। পাকিস্তানে জন্মানো হিশা কুমারী ২০১৩ সালে পরিবারের সঙ্গে ভারতে আসেন। ওপারে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আহমেদাবাদে এসে ফের ভর্তি হন অষ্টম শ্রেণিতেই। বর্তমানে তিনি একজন ডাক্তার। এদিন তাঁর হাতে ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি।
মঙ্গলবার গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দেন ১৯৮১ সালে করাচিতে জন্মগ্রহণ করা শেন সেবাস্তিয়ান পেরেরার হাতে। জন্মের প্রায় পরপরই পরিবারের সঙ্গে ভারতে চলে আসেন সেবাস্তিয়ান। ভারতেই পড়াশোনা করে ২০১২ সালে বিয়ে করেন গ্লোরিয়া ফার্নান্ডেজ নামে এক ভারতীয় মহিলাকে। জোসেফ পেরেরা নামক পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসা পরিচিত আরেকজন সিএএ অনুযায়ী নাগরিকত্ব পেতেই মাস তিনেক আগে নিজের নাগরিকত্বের আবেদন করেন সেবাস্তিয়ান। অবশেষে তাঁরও স্বপ্নপূরণ হয়ে গেল।