সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা RSS হিন্দুত্ববাদী সংগঠন, যেখানে মুসলিমদের প্রবেশাধিকার নেই। শতবর্ষ প্রাচীন এই সংগঠনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ নতুন নয়। আরএসএসের শতবর্ষ উপলক্ষে বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই ইস্যুতে মুখ খুললেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। জানালেন, মুসলিম, খ্রিস্টান, ব্রাহ্মণ বা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের কারও ঠাঁই নেই এই সংগঠনে। এই জায়গা শুধুমাত্র ভারত মায়ের সন্তানদের।
বেঙ্গালুরুর ওই অনুষ্ঠানে মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে আরএসএসের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভাগবত বলেন, "সংঘে কোনও ব্রাহ্মণের প্রবেশাধিকার নেই, কোনও বর্ণের কারও প্রবেশাধিকার নেই, মুসলিম ও খ্রিস্টানদেরও নেই। তবে মুসলিম, খ্রিস্টান বা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ যদি নিজেদের বিচ্ছিন্নতাকে দূরে সরিয়ে রেখে সংঘে আসতে পারেন। যখন আপনি শাখায় আসবেন তখন আপনি ভারত মায়ের পুত্র হিসেবে এখানে আসবেন।" একইসঙ্গে ভাগবত বলেন, "মুসলিম, খ্রিস্টানরা আমাদের এখানে আসেন ধর্মীয় পরিচয়ে হিসেব কষি না। আমরা প্রশ্ন করি না তাঁরা কোন ধর্ম বা জাতির সদস্য।
ভিন্ন ধর্ম ও জাতিগত বিভেদ দূরে ঠেললেও শনিবার এক সাক্ষাৎকারে ভাগবত হিন্দু সংস্কৃতির গৌরব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বাস যাই হোক না কেন ভারতে বসবাসকারী প্রতিটি ব্যক্তি হিন্দু সভ্যতার অংশ। কারণ তাঁদের পূর্বপুরুষ হিন্দু। মুসলিম হোক বা খ্রিস্টান, আমরা সকলেই একই সভ্যতা থেকে এসেছি আমাদের পূর্বপুরুষ একই। ভারতে কোনও অহিন্দু নেই। মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা যাতে তাঁদের শিকড় ভুলে যায় তার জন্য অবশ্য কম চেষ্টা করা হয়নি। একইসঙ্গে বলেন, ভারত একটি হিন্দু জাতি। দেশের সংবিধানও এর বিরোধিতা করে না। ফলে সনাতন ধর্ম এবং ভারতকে আলাদা করা যায় না। অতএব, সনাতন ধর্মের অগ্রগতিই ভারতের অগ্রগতি।
বেঙ্গালুরুর অনুষ্ঠানে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন ভাগবত। বলেন, আরএসএস-কে তিন বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যেকবার আদালত সেই নির্দেশ বাতিল করেছে। সংসদে আরএসএস-এর পক্ষে এবং বিপক্ষে বহু কথা হয়েছে। তাঁর দাবি, আরএসএস আইনত একটি সংগঠন এবং তাঁরা সংবিধানবিরোধী নয়। শুধুমাত্র সেই কারণেই তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার প্রয়োজন নেই। হিন্দু ধর্মের সঙ্গে তুলনা টেনে ভাগবতের দাবি, ‘অনেক জিনিস আছে যা নথিভুক্ত নয়। এমনকি হিন্দু ধর্মও নথিভুক্ত নয়।’
