সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেট্রল-ডিজেলে (Petrol-Diesel Price) শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই আত্মপ্রচারে আসরে নেমে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন আরও সহজ হবে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মোদির ঘোষণা, ‘আমাদের কাছে মানুষই সবার আগে।’
শনিবার আমআদমিকে স্বস্তি দিয়ে জ্বালানিতে একধাক্কায় অনেকটা শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র সরকার। পেট্রলে ৮টাকা এবং ডিজেলে ৭টাকা শুল্ক কমানো হয়েছে। যার ফলে পেট্রলে লিটারপ্রতি দাম কমবে ৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর ডিজেলে দাম কমবে লিটারপ্রতি ৭ টাকা করে। শুধু তাই নয়। রান্নার গ্যাসের দামেও বড়সড় স্বস্তি দিয়েছে মোদি সরকার। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman) এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা রান্নার গ্যাসে এবার থেকে সিলিন্ডারপ্রতি ভরতুকি মিলবে ২০০ টাকা করে। এর পাশাপাশি রাসায়নিক সারেও বিপুল ভরতুকি ঘোষণা করা হয়েছে। ছাড় দেওয়া হয়েছে একাধিক পণ্যের আমদানি শুল্কেও।
[আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেস নিজেকে বিগ ড্যাডি ভাবে না’, লন্ডনে বসে বিরোধী ঐক্যের বার্তা রাহুলের]
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দাবি, এই সিদ্ধান্তের ফলে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে এবং মাসিক বাজেটের উপর চাপ কমবে। নির্মলার ঘোষণার পরই মোদির টুইট, “আমাদের কাছে সবসময় সবার আগে মানুষ। আজকের সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত বহু ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করবে। আমাদের নাগরিকদের জীবনযাত্রা আরও সহজ করবে।” রান্নার গ্যাসের ভরতুকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “উজ্জ্বলা যোজনা কোটি কোটি ভারতবাসীকে সাহায্য করছে। বিশেষ করে মহিলাদের। আজকের সিদ্ধান্ত নাগরিকদের মাসিক খরচ অনেকটা কমবে।”
[আরও পড়ুন: বড় হারে শুল্ক কমাল কেন্দ্র, একধাক্কায় অনেকটা কমছে পেট্রল-ডিজেলের দাম, স্বস্তি রান্নার গ্যাসেও]
মোদি সরকারের অষ্টম বর্ষপূর্তির ঠিক প্রাক্কালে এই ঘোষণা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আসলে লাগাতার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জেরে দীর্ঘদিন ধরেই গেরস্থের হেঁসেলে রীতিমতো আগুন লেগে আছে। যা এই সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করছিল। সূত্রের দাবি, পেট্রপণ্যে এবং রান্নার গ্যাসের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি জনমানসে মোদি সরকার সম্পর্কে বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে নাকি বিজেপি (BJP) শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও তেমন রিপোর্টই জমা পড়েছে। সরকারের অষ্টম বর্ষপূর্তির আবহে যা একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন ছিল না সরকারের জন্য। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
বিরোধীরাও বলছে, লাগাতার আন্দোলনের চাপে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তাছাড়া এই দাম কমানো নেহাতই ‘আইওয়াশ’ বলে অভিযোগ করেছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের (Congress) রণদীপ সুরজেওয়ালা দাবি করেছেন, “সরকার পেট্রলের দাম স্রেফ গত ৬০ দিনে ১০ টাকার বেশি বাড়িয়েছে। সেখানে কমানো হচ্ছে মাত্র ৯ টাকা ৫০ পয়সা। এখনও ৯৫ টাকার বেশি দরে পেট্রল কিনতে হচ্ছে। মানুষকে আর কতদিন এভাবে জুমলা দেবেন? ” তৃণমূল (TMC) নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলছেন,”সমুদ্রের থেকে সামান্য জল তোলা ছাড়া এটা আর কিছুই নয়।”