সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেটে গিয়েছে দু দশকেরও বেশি সময়। গুজরাটের গোধরায় জ্বলন্ত ট্রেন আর শয়ে শয়ে লাশের ছবি এখনও ফিকে হয়নি ভারতবাসীর মন থেকে। সেসময় সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কীভাবে এত মানুষের মৃত্যু যন্ত্রণা চেপে রেখে, মন শক্ত করে কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি, এতদিন পর সেকথাই তুলে ধরলেন এক পডকাস্ট চ্যানেলে। বললেন, ''যতটা পেরেছি, নিজেকে সামলেছি। আবেগের ঊর্ধ্বে উঠে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। কল্পনা করুন, চারিদিকে লাশের পাহাড়...। আমি তার মাঝে দাঁড়িয়ে।''
নিখিল কামাত নামে এক সাংবাদিকের পডকাস্ট চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ২০০২ সালের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন আজকের প্রধানমন্ত্রী। সেবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন গোধরায় এই ঘটনা ঘটছে, তার ঠিক তিনদিন আগে ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তার মধ্যে এমন চিত্র দেখে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মোদি বলেন, ''বিধানসভায় ছিলাম সেদিন। হঠাৎ খবরটা পেলাম যে গোধরায় ট্রেনে আগুন লেগে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুনেই আমি কেঁপে উঠি। অত্যন্ত আশঙ্কা হতে থাকে। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসি। ভাদোদরা থেকে গোধরা যেতে চাই। সেসময় কোনও কপ্টার ছিল না। আমি বলি যে কোনও কপ্টার লাগবে না। সাধারণ মানুষ যেভাবে যাচ্ছে, সেভাবেই যাব। তা সত্ত্বেও একটা সিঙ্গল ইঞ্জিন কপ্টারের ব্যবস্থা করেছিল ONGC. তাতেই গেলাম।''
এরপরই সেই হাড়হিম করা দৃশ্য। মোদির কথায়, ''গিয়ে দেখি, চারপাশে শুধু মানুষের দেহ ছড়িয়ে রয়েছে, পোড়া পোড়া। আমার হৃদয় ভেঙে গেল। কীভাবে যে নিজেকে সামলেছি... আমিও তো একজন মানুষ। তারপর মনে হল, আমাকে এসবের ঊর্ধ্বে উঠে পরিস্থিতি অনুযায়ী সব ব্য়বস্থা করতে হবে। সব যন্ত্রণা বুকে চেপে সেই কাজ করি। এই ঘটনাটা সামলানো আমার পক্ষে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল। সেসময় যেভাবে পেরেছি, পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।'' এনিয়ে শুক্রবার সাক্ষাৎকারে তাঁর আবেগের প্রতিফলন ঘটেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।