সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াকফ বিতর্কের মাঝেই এবার রাষ্ট্রীয় সয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস-এর এক দাবিকে কেন্দ্র করে বিস্ফোরক অভিযোগ বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর। তাঁর দাবি, ওয়াকফ-এর পর এবার আরএসএসের নজর খ্রিস্টানদের জমির দিকে। এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন রাহুল। যেখানে আরএসএস মুখপত্রের দাবিকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, 'দেশের ৭ কোটি হেক্টর জমি ক্যাথলিক চার্চের অধীনে রয়েছে।'
এক্স হ্যান্ডেলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরেছেন রাহুল গান্ধী। যেখানে আরএসএসের মুখপত্রের তরফে ক্যাথলিক চার্চের অধীনে থাকা জমি সংক্রান্ত বিশদ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, 'দেশজুড়ে ভারতের ক্যাথলিক চার্চের অধীনে রয়েছে ৭ কোটি হেক্টর অর্থাৎ ১৭.২৯ কোটি একর জমি। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।' এই প্রতিবেদন তুলে ধরে এক্স হ্যান্ডেলে রাহুল লিখেছেন, 'আমি আগেই জানিয়েছিলাম ওয়াকফ বিল সরাসরি দেশের মুসলিমদের উপর আঘাত হানছে। এবং ভবিষ্যতে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলিকে নিশানায় নেওয়ার পথ পরিষ্কার করছে। মুসলিমদের পর এবার আরএসএস খ্রিস্টানদের দিকে নজর দিয়েছে।' একইসঙ্গে রাহুল গান্ধী লিখেছেন, সংবিধানই একমাত্র ঢাল যা আমাদের জনগণকে এই ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। ফলে এই সংবিধানকে রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।'
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী আইন। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই এবার আইনে পরিণত হবে বিলটি। বিজেপির দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে কোটি কোটি প্রান্তিক মুসলিম সমাজ উপকৃত হবেন। এতদিন ধরে গুটিকয়েক প্রভাবশালীর হাতে কুক্ষিগত ওয়াকফ সম্পত্তি মুক্ত হবে এবং সাধারণ মুসলিমরা উপকৃত হবেন। যদিও বিরোধীদের দাবি, এই বিল পুরোপুরি অসাংবিধানিক। এটা আসলে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ।
এই বিলের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। দাবি করা হয়েছে বিলটি সংবিধানের ১৪, ২৪, ২৬, ২৯ এবং ৩০০এ ধারা লঙ্ঘন করছে। যে যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে তা হল, সমানাধিকার, ধর্মাচারণের অধিকার, ধর্মীয় বিষয় পরিচালনার স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু অধিকার এবং সম্পত্তির অধিকার। বিলে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে দাবি করা হয়েছে, এই বিলে সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং স্টেট ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের রাখার কথা বলা হয়েছে। যা নিয়েও আপত্তি তোলা হয়েছে।