বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: শিয়রে হিমাচল ও গুজরাটে ভোট। দুই রাজ্যেই বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। ভোট আসতেই ন্যাশানাল হেরাল্ড (National Herald) মামলায় সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে ফের সক্রিয় হতে পারে ইডি। গান্ধী পরিবারের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে ৪-৫ কোটি টাকা ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর। তলব করা হতে পারে নবনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকেও। দুই রাজ্যের ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয় হয়ে ওঠার পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখছে কংগ্রেস (Congress)। যদিও ইডির তরফে এই তিন শীর্ষনেতৃত্বের কাছে এখনও কোনও চিঠি আসেনি বলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের হদিশ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ৪-৫ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ইডি ওই ভুয়ো সংস্থাগুলির মালিক, শেয়ার হোল্ডার ও ডিরেক্টরদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সন্দেহজনক এই আর্থিক লেনদেন নিয়ে একাধিক তথ্য প্রমাণ এসেছে ইডির হাতে। ওই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), রাহুল গান্ধী-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতাকে তলব করা হতে পারে। প্রয়োজনে মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করা হতে পারে ইয়ং ইন্ডিয়ান (Young Indian) সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত কংগ্রেস কর্মীদের। মাস কয়েক আগেই সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল ইডি। বেশ কয়েক দফায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা মা ও ছেলেকে জেরা করা হয়। প্রতিবাদে রাস্তায় নামে কংগ্রেস। দেশজুড়ে প্রতিবাদ করা হয় কংগ্রেসের তরফে।
[আরও পড়ুন: ইরানের আন্দোলনের আঁচ ভারতে, আমিনিকে সমর্থন করে হিজাব পোড়ালেন কেরলের মহিলারা]
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। সংবাদপত্রের কমপক্ষে ৩৮ শতাংশ শেয়ার তাদের নামেই ছিল। ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রও এই সংস্থার অধীন। গত অগস্ট মাসেই ইডি দিল্লিতে ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেডের অফিসে তল্লাশি চালায়। কংগ্রেস সাংসদ তথা বর্তমান কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের (Mallikarjun Kharge) উপস্থিতিতেই প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে হেরাল্ড হাউস বিল্ডিংয়ে অবস্থিত ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার অফিসে তল্লাশি চলে। পরে অগস্ট মাসেই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় প্রথমে তলব করা হয় রাহুল গান্ধীকে। টানা ৫দিন ধরে প্রায় ৫০ ঘণ্টা জেরা করা হয় রাহুল গান্ধীকে। সেই সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সনিয়া গান্ধী। তিনি সুস্থ হওয়ার পর তিন দফায় জেরা করা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘মদ খান, ধূমপান করুন কিন্তু…’, আমজনতাকে আজব পরামর্শ দিলেন বিজেপি সাংসদ]
সেই সময় জানা গিয়েছিল, রাহুল ও সনিয়ার জবাবে সন্তুষ্ট নয় ইডি। এই তথ্যের ভিত্তিতেই কংগ্রেসের মালিকানাধীন ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত পবন বনসল, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠাতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED), এমনটাই সূত্রের খবর। তবে ইডির সক্রিয়তা নিয়ে ভাবিত নয় কংগ্রেস। দলের এক শীর্ষনেতার মতে, দুই রাজ্যে ভোট। সেখানে যথেষ্ঠ চাপে রয়েছে বিজেপি। তাই ইডির মতো তদন্তকারী সংস্থাকে নামিয়ে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার চক্রান্ত করছে কেন্দ্রের শাসকদল।