সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র অবিবাহিতা বলে একজন নারীকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। তাই বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, তরুণীর জীবনের ঝুঁকি না থাকলে গর্ভপাত করাতে কোনও বাধা নেই।
সম্প্রতি ২৫ বছরের এক তরুণী এই আরজি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর গর্ভে থাকা সন্তানের বয়স ২৪ সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আদালতের কাছে আরজি জানিয়ে ওই তরুণী বলেন, তিনি স্বেচ্ছায় অন্তঃসত্ত্বা হলেও পরে তাঁর সঙ্গী তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, এই অবস্থায় ‘কুমারী মা’ হয়ে ওই সন্তানকে যদি তিনি জন্ম দেন, তাহলে তাঁকে মানসিক যন্ত্রণার পাশাপাশি সামাজিক কলঙ্কের ভারও বইতে হবে। তাছাড়া এই পরিস্থিতিতে মা হতে তিনি একেবারেই প্রস্তুত নন বলেও ওই তরুণী জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বাইকে ট্রাকের ধাক্কায় এ কী ঘটল! সুস্থ সন্তান প্রসবের পরই মৃত্যু মহিলার]
কিছুদিন আগেই গর্ভপাত (Abortion) করানোর অনুমতি চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi Highcourt) দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু সেখানে তাঁর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। ২০০৩ সালের গর্ভপাত আইন অনুযায়ী, কোনও ধর্ষিতা কিংবা নাবালিকা অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে অথবা দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে চাইলে আদালত তাঁদের ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতের অনুমতি দিতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া মানে শিশুটিকে হত্যারই শামিল। এই রায়ের পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী।
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে, “ভারতের সংসদ কখনই চায় না, একজন মহিলা অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার মধ্য দিয়ে যান। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা রায় ঘোষণা করছি। আবেদনকারী একজন অবিবাহিতা বলেই তাঁকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। একজন মহিলা বিবাহিত হোন বা অবিবাহিত, তার উপরে ভিত্তি করে সংসদীয় আইনের কোনও বদল ঘটানো হয় না।” সেই সঙ্গে আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, ২০২১ সালে গর্ভপাত আইন সংশোধন করে ‘স্বামী’র বদলে ‘সঙ্গী’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিবাহিত মহিলাদেরও গর্ভপাতের সুবিধা দেওয়ার জন্যই আইন পালটানো হয়েছে।