সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার দুপুরে দুবাইয়ের আল মাকতৌম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আছড়ে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার তেজস যুদ্ধবিমান। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাইলটের। রবিবার পরিবারের সঙ্গে একসঙ্গে উইং কমান্ডার নমনশ সায়লকে শেষ বিদায় জানালেন স্ত্রী। এরপরেই সোমবার এই প্রসঙ্গে নিজদের বক্তব্য জানিয়েছে তেজস প্রস্তুতকারক সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে এটি একটি 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা'।
সরকার পরিচালিত মহাকাশ সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) সোমবার জানিয়েছে, দুবাইতে একটি বিমান প্রদর্শনী চলাকালীন তেজস যুদ্ধবিমানের দুর্ঘটনা একটি 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা'। শুক্রবার দুবাইয়ে বিমান প্রদর্শনী চলাকালীন হ্যাল-নির্মিত একটি তেজস বিমান ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় একমাত্র পাইলট উইং কমান্ডার নমনশ সায়লের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পরেই দ্রুত নামতে থাকে হ্যালের শেয়ারের দাম। সোমবার সকালের শেয়ার কেনাবেচায় প্রায় আট শতাংশ পতন হয় হ্যালের শেয়ারের। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে আট শতাংশ কমে হ্যালের শেয়ারের দাম হয় চার হাজার ২০৫ টাকা। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে চার শতাংশ কমে দাম হয় চার হাজার ৪০৫ টাকা।
এরপরেই, সংস্থা জানিয়েছে, 'ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে' এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দেওয়া নথিতে বলা হয়েছে, 'আমরা জানাতে চাই দুবাই এয়ার শোতে বিমান প্রদর্শনীর সময় ঘটা সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে হওয়া একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।' হ্যাল আরও জানিয়েছে, 'আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম, আর্থিক কর্মক্ষমতা বা ভবিষ্যতের সরবরাহের উপর এই ঘটনার কোনও প্রভাব পড়বে না।' সংস্থার দাবি, তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে হ্যাল। তাঁরা আরও জানিয়েছে, সমস্ত অংশিদারদের সব তথ্য জানানো হবে।
কিছুদিন আগেই, বিমান বাহিনীর তোপের মুখে পড়ে হ্যাল। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী সেই বিমান সরবরাহ হয়নি। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে হ্যাল-এর দিকে আঙুল তুলেছিলেন বায়ুসেনা প্রধান কে পি সিং। বলেন, "এই মুহূর্তে হ্যালের উপর আমাদের বিন্দুমাত্র ভরসা নেই। বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য। আমাদের প্রয়োজন মেটানো ও নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানোর দায় ওই সংস্থার নিজের। আমাদের যাতে বিশ্বাস ফেরে সেই উদ্যোগ নেওয়া উচিত সংস্থার।"
হ্যালের বিমান সরবরাহে বিলম্বের মূল কারণ হিসেবে উঠে আসে ইঞ্জিন আমদানির অসুবিধা। সম্প্রতি জিই-র সঙ্গে ইঞ্জিন সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়। মনে করা হচ্ছিল এরপরেই গতি আসবে তেজসের সরবরাহে। কিন্তু দুবাই বিমান প্রদর্শনিতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় বেলাইন হয়ে ফের প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেয় সরবরাহ নিয়ে। এবার সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়ারই চেষ্টা করেছে সংস্থা।
