shono
Advertisement
CEC

রক্ত লেগে জ্ঞানেশের হাতেই! তৃণমূল প্রতিনিধি দলের নিশানায় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার

শুক্রবার দিল্লির নির্বাচন সদনে ১০ তৃণমূল সাংসদ দেখা করেন CEC-র সঙ্গে।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 05:06 PM Nov 28, 2025Updated: 06:45 PM Nov 28, 2025

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন তার নেতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরতে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সাক্ষাৎ করল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার কমিশনের সময়মতো বেলা ১১ টা নাগাদ ১০ সাংসদ কমিশনের কার্যালয় গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর সেখান থেকে বেরিয়ে কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দেন ডেরেক ও ব্রায়েন, শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের অভিযোগ, এসআইআরের 'চাপে' রাজ্যে এতজনের মৃত্যুর রক্ত লেগে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেই! সাংবাদিক বৈঠকে শতাব্দী রায়, মহুয়া মৈত্র, দোলা সেনদের প্রশ্ন, ''এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুগুলোর রক্ত কি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেই লেগে নেই?'' ডেরেক ও ব্রায়েনের অভিযোগ, এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের পাঁচ প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গে এসআইআর বা ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ চলছে। মাত্র ২ মাসের মধ্যে যাবতীয় কাজ শেষের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক। দ্রুত এসআইআর করতে গিয়ে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা করছে তৃণমূল। আর এই আশঙ্কা থেকে সাধারণ মানুষ এবং কাজের চাপে বিএলও-দের মৃত্যুর মতো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে রাজ্যে। সেই সংখ্যা কম নয় মোটেও। এসব সমস্যার কথা নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে তুলে ধরতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১০ সাংসদের একটি দল শুক্রবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁরা উল্লেখ করেছেন জ্ঞানেশ কুমারের সামনে।

তৃণমূল সাংসদদের বক্তব্য, SIR প্রক্রিয়ার আসল উদ্দেশ্য এখন খুবই সন্দেহজনক লাগছে। এই প্রক্রিয়া কি সত্যিই ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়ার জন্য, নাকি বাঙালির নিজস্ব পরিচয় মুছে ফেলার জন্য? দেশে অনুপ্রবেশকারী ঢোকাই যদি প্রধান সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে ত্রিপুরা, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মণিপুরের মতো যেসব রাজ্যগুলির সঙ্গে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সীমান্ত, সেখানে কেন এই প্রক্রিয়া হচ্ছে না? এমনকী অসমেও SIR প্রক্রিয়া হবে না কারণ সেখানে নাকি 'বিশেষ সংশোধন' প্রক্রিয়া চলছে। তাহলে শুধুমাত্র বাংলাতেই কেন ব্যতিক্রম?

আরও প্রশ্ন, যে ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশন এত উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তার ভিত্তিতেই তো গত বছর সাধারণ নির্বাচন হয়েছিল। তারপর তিনটে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও হয়েছে। সাধারণ মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন এই ভেবে যে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত ছিল। তাহলে এক বছরের ব্যবধানে সেই ভোটার তালিকা কীভাবে আর নির্ভরযোগ্য হচ্ছে না বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন?

তাঁদের আরও বক্তব্য, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে SIR-এর কাজ করতে গিয়ে বহু ব্লক লেভেল অফিসার প্রাণ হারিয়েছেন। কিছুক্ষেত্রে BLO-রা নির্বাচন কমিশনের অমানবিক চাপে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। আবার কিছুক্ষেত্রে BLO-দের পরিবারদের দাবি, তাঁদের প্রিয়জনদের এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে কাজ করানো হয়েছিল যে তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত অকালমৃত্যু হয়। এসব তথ্য জানিয়ে তৃণমূল প্রতিনিধিদের প্রশ্ন, ''এই প্রাণহানির দায় কে নেবে? নির্বাচন কমিশন, নাকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার শ্রী জ্ঞানেশ কুমার? আমরা দেখেছি, BLO-দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি, প্রয়োজনীয় সহায়তাও দেওয়া হয়নি। অবাস্তব সময়সীমার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং তার ফলে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা মারা যান। এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুগুলোর রক্ত কি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের হাতেই লেগে নেই?''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের।
  • 'SIR মৃত্যুর রক্ত কি লেগে নেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেই?', সাক্ষাতের পর বেরিয়ে প্রশ্ন সাংসদদের।
Advertisement