নন্দিতা রায় ও সৌরভ মাজি, নয়াদিল্লি ও বর্ধমান: সদ্য দল বদলেছেন তিনি। এবার তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করার আবেদন জানাল তৃণমূল। দুই বর্ধমানের একমাত্র তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দলত্যাগী আইন প্রয়োগের জন্য লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিল ঘাসফুল শিবির। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সাংসদ সুনীল মণ্ডল (Sunil Mandal) তৃণমূলের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছেন। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “যথাসময় গিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়ে আসব। পুনরায় জিতে ক্ষমতায়ও আসব।”
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছেন। তাতে পূর্ব বর্ধমানের সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজ করার আবেদন রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০-এর শেষের দিকে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়েছেন সুনীল। যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে (BJP)। কিন্তু সাংসদ পদ ছাড়েননি তিনি। তাই এবার তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগী আইন প্রয়োগের আরজি জানানো হয়েছে।
[আরো পড়ুন : ‘ভ্যাকসিনের বেলায় স্বদেশি নয় কেন?’ মোদিকে বিঁধে টিকা নিতে অস্বীকার কংগ্রেস বিধায়কের]
সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে জটিলতা আছে কি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্ব বর্ধমানের সাংসদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগে কোনও সমস্যা নেই। কারণ, তৃণমূলের দুই তৃতীয়াংশ সাংসদ দল ছাড়ছেন না, একা সুনীল মণ্ডল দলবদল করেছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে।
যদিও এই আইন প্রয়োগ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন সুনীলবাবু। তাঁর কথায়, “তিন বছর আগে বাম-কংগ্রেস থেকে বহু বিধায়ক তৃণমূলে এসেছেন। তাঁরা বিধায়ক পদ না ছেড়েই তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে কেন দলত্যাগী আইন প্রয়োগ হল না?”
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী এই দলত্যাগী আইন? ১৯৮৫ সালে কার্যকর হওয়া এই আইনের বলে দলবদল করা বিধায়ক বা সাংসদদের পদ কেড়ে নেওয়া যায়। স্বেচ্ছায় দলের সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়া বা দলীয় নির্দেশ বা হুইপ অগ্রাহ্য করলে এই আইন প্রয়োগ করা যায়। কিন্তু যদি কোনও দলের দুই তৃতীয়াংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি সেই দল ছাড়তে চান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা যায় না। আবার যাঁরা পুরনো দলে রইলেন তাঁদেরও বিধায়ক বা সাংসদ পদ খারিজ করা যায় না।