shono
Advertisement
Uttar Pradesh

চূড়ান্ত জলকষ্ট অতীত, ৮০ বছরে প্রথম জলের কল পেল উত্তরপ্রদেশের এই গ্রাম

গ্রামে জলের একমাত্র মাধ্যম ছিল পার্শ্ববর্তী এক ঝর্ণা। গরমে তাও যেত শুকিয়ে।
Posted: 03:16 PM Apr 21, 2024Updated: 03:16 PM Apr 21, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঠফাটা রোদে নাজেহাল দশা দেশবাসীর। তবে এই তীব্র দহনেও খুশিতে ভাসছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মির্জাপুর জেলার পার্বত্য গ্রাম লাহুরিয়া দহ (Lahuria Dah)। খুশি হওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। গ্রামের ৮০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার সরকারি উদ্যোগে নলবাহিত জল (Tap water supply) ঢুকল গ্রামে। দীর্ঘ জলকষ্ট ভোগের পর অবশেষে স্বস্তিতে গ্রামের অন্তত ১২০০ মানুষ।

Advertisement

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে এতকাল কী জলের সংস্থান ছিল না গোটা গ্রামে? মানুষ বাঁচতই বা কীভাবে? লাহুরিয়া দহ গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, স্বাধীনতার সময়কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গোটা গ্রাম জলের জন্য নির্ভরশীল ছিল পার্শ্ববর্তী একটি ঝর্ণার উপর। গরমকালে যে ঝর্ণা পুরোপুরি শুকিয়ে যেত। তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় ছিল জল কিনে খাওয়া। সমস্যা মেটাতে সরকারের তরফে আগেও উদ্যোগ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সঠিকভাবে তা কার্যকর হয়নি। বিষয়টি নজরে আসতেই তৎপর হন জেলাশাসক দিব্যা মিত্তাল। তাঁর উদ্যোগেই গ্রামে পাইপ লাইন বসিয়ে প্রথমবার শুরু হল জলের সরবরাহ।

গ্রামের বাসিন্দা কৌশলেন্দ্র গুপ্তা বলেন, "শুধুমাত্র খাওয়ার জলের সংস্থান করতে আমাদের সারা বছরের আয়ের টাকা বেরিয়ে যায়। লাহুরিয়া দহ গ্রামের জলের লাইন আনার কাজ অত্যন্ত কঠিন ছিল তা বুঝতে পারি আমরা। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে একদশক আগে প্রকল্প শুরু হলেও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আর জল জীবন মিশনের অন্তর্ভুক্ত হয়নি গ্রামটি।" তিনি আরও বলেন, "স্বাধীনতার পর অল্প কয়েকটি পরিবার এই গ্রামে গবাধি পশু-সহ বসবাস শুরু করেন। তখন ঝর্ণার জল পর্যাপ্ত ছিল তাঁদের বেঁচে থাকার জন্য। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। সকলের প্রয়োজন মেটাতে ওই সামান্য ঝর্ণার জল পর্যাপ্ত নয়। এবং গ্রীষ্মকালে ওই ঝর্ণা পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।" স্থানীয় বাসিন্দা জীবনলাল যাদব বলেন, "আমার মতো গ্রামের অনেকেই দুধের ব্যবসা করেন, দূরের গ্রামে দুধ বিক্রি করতে গিয়ে সেখান থেকে জল ভরে গ্রামে ফেরেন তাঁরা। গত ২৫-৩০ বছর ধরে ট্যাঙ্কের মাধ্যমে জল আনার ব্যবস্থা করা হয় গ্রামে। তবে গোটা গ্রামের বার্ষিক বাজেট বেরিয়ে যেত জল জোগাড় করতে।"

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রথমবার ৪.৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জলপ্রকল্প চালুর চেষ্টা হয়, তবে ব্যর্থ হয় সে পরিকল্পনা। এরপর গ্রামবাসীদের আবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেন জেলাশাসক দিব্যা মিত্তাল নিজেই। নয়া প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। অত উঁচুতে ওই পাহাড়ি গ্রামে জল কীভাবে পৌঁছন হবে তা ঠিক করতে ভূ-পদার্থবিদ থেকে শুরু করে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ টিমকে নিয়ে কাজে নামে জল জীবন মিশন, উত্তরপ্রদেশ জল নিগম, নমামি গঙ্গের সরকারি আধিকারিকরা। তাঁদের উদ্যোগে পুরো প্রকল্পের ম্যাপ তৈরি করা হয়। সরকারি অনুমোদন মেলার পর ৩১ অগাস্ট ২০২৩ সালে প্রথমবার নলবাহিত জল ঢোকে গ্রামে। এছাড়াও গ্রামে বৃষ্টির জল ধরে রাখতে বাঁধ ও পুকুর খনন করেছে সরকার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • জলের সংস্থান করতে সারা বছরের আয়ের টাকা বেরিয়ে যেত গ্রামবাসীদের।
  • বিষয়টি নজরে আসতেই উদ্যোগী হন জেলাশাসক দিব্যা মিত্তাল।
  • বহু পরিকল্পনার পর ১০ কোটি ব্যায়ে জল পেলেন গ্রামবাসীরা।
Advertisement