সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখে টানা ১৫ দিন যুদ্ধ চালাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গোলাবারুদ, বুলেট, গ্রেনেড, ল্যান্ডমাইন ও অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল-সহ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মজুত করছে ভারতীয় সেনা। বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ পূর্ব লাদাখের ভারতীয় সেনার ফরোয়ার্ড পোস্টগুলির খুব কাছে গোপন অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত করা হচ্ছে। চিনের বিরুদ্ধে যে কোনও সময় বড় সংঘাত হতে পারে ধরে নিয়েই এই অস্ত্র মজুত করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, কাশ্মীরে এবং লাদাখে মোতায়েন সেনার এখনকার চাহিদা মেনে গোলাবারুদ কেনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত ৫০ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। সেনাকে এই পরিমাণ অর্থ নিজেদের মতো খরচ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। দেশি এবং বিদেশি অর্ডিন্যান্স কারখানাগুলি থেকে এই বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, বুলেট, গ্রেনেড কেনা বা আমদানি করা হবে।
[আরও পড়ুন: বন্ধুর ড্রিঙ্কসে ড্রাগ মিশিয়ে তাঁর বিদেশি স্ত্রীকে ধর্ষণ! কর্নেলের কুকীর্তিতে ছড়াল চাঞ্চল্য]
সেনা গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন ভারতীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সেনাবাহিনী মনে করছে চিনের (China) সঙ্গে পূর্ব লাদাখে যুদ্ধ হলে সুযোগ বুঝে পশ্চিম লাদাখে হামলা চালাবে পাকিস্তান (Pakistan)ও। ফলে দুটি ফ্রন্টে একসঙ্গে মহাযুদ্ধ লড়তে হবে সেনাকে। এতদিন সেনা যুদ্ধ চালাতে ১০ দিনের অস্ত্রভাণ্ডার মজুত রেখেছিল কাশ্মীর ও লাদাখে। কিন্তু এবার তা বাড়িয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে। ফলে গোলাবারুদ, বুলেট, গ্রেনেডের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ। সেনাবাহিনী মনে করছে, গোপনে বোঝাপড়া করেই একসঙ্গে হামলা চালাবে চিন ও পাকিস্তান। সম্প্রতি তার প্রমাণও মিলেছে। কারণ গালওয়ানে চিনের হামলার পর যখন উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছিল তখন পাক সেনা পশ্চিম লাদাখে নিজেদের সক্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ভারত মনে করছে, দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ হলে তা হবে ব্যাপকতর এবং গভীর। তাই পাকিস্তান সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় এবং চিন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় জোড়া শত্রুর মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র মজুত রাখতে হচ্ছে সেনাকে। ২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় সেনা। তখনই তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্করের নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা কমিটি সুপারিশ করেছিল, অন্তত টানা ৪০ দিন যুদ্ধ চালানোর রসদ ও গোলাবারুদ মজুত রাখতে হবে সেনাকে। কিন্তু স্বল্প বাজেট বরাদ্দের কারণে তখন সেনা ১০ দিনের অস্ত্রভাণ্ডার মজুত রাখতে পেরেছিল। পরে তা ধাপে ধাপে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতদিন সিকিমের কাছে ডোকলাম ছাড়া চিন সীমান্তের অন্যত্র যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ফলে এতটা অস্ত্র মজুত করার দরকার পড়েনি। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি পুরো পালটে গিয়েছে। পাক-চিন আগ্রাসন ভারতের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তাই লাদাখ ও কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনা ও বায়ুসেনা বিপুল পরিমাণে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল, হাউইৎজার কামানের গোলা, প্রিসিশন গাইড মিসাইল ও লেসার গাইডেড বোমা মজুত করছে।