সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে৷ আর এই দুর্নীতি নামক শত্রুকে সমূলে বিনাস করতেই এত ঢাল তলোয়ার৷ কিন্তু সেই ঢাল তলোয়ারই যদি ভোঁতা হয় তাহলে কি হবে? কিংবা শত্রুপক্ষ যদিও বিপক্ষে ছোঁড়া অস্ত্র থেকে নিজেদের বাঁচাতে সক্ষম হয় তাহলেই বা কি হবে? প্রশ্নটা সেখানেই৷ আর ভারতে নোট বাতিল আদৌ কতটা কার্যকরী তা নিয়ে এবার এই প্রশ্নই উঠে গেল বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিতে৷
দেশে কালো টাকাকে শেষ হিসাবের মধ্যে আনতেই গত ৮ নভেম্বর হঠাৎই পুরনো ৫০০, হাজারের নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ আশা করা হয়েছিল দেশ জুড়ে বেশিরভাগ কালো টাকার কারবারিদের কাছে নগদ মজুত এই বড় নোটেই থাকবে৷ পুরনো নোট ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে নতুন নোট তুলতে গেলেই হাতে নাতে ধরা পড়বে তারা৷ শুধু তাই নয়, নতুন কর ব্যবস্থা চালুও করে কেন্দ্র৷ বলা হয় হিসাববহির্ভূত টাকার মালিকরা চাইলে ৫০ শতাংশ কর দিয়ে তাঁদের কালো টাকা সাদা করতে পারেন৷ তবে এতেও না কাজ হলে উলটে ধরা পড়লে চরম খেসারত পোয়াতে হবে কালো টাকার কারবারিদের৷ সেক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ টাকাই বাজেয়াপ্ত করবে আয়কর দফতর৷ শুধু তাই নয়, সোনা কেনা বা মজুত রাখার ক্ষেত্রেওে রাশ টেনেছে কেন্দ্র৷ রাতারাতি টাকা সাদা করতে সোনা কিনে ফেলবেন৷ তাতেও কিন্তু হাতকড়া পরতে পারে৷
সেই মতোই কাজ চলছে৷ সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে চলছে খানা তল্লাশি৷ আর হানা দিতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ হচ্ছে আয়কর অফিসারদের৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার হচ্ছে থরে থরে টাকা৷ কারও বাড়ির বিছানার তলায়, কেউ বা আবার বাড়ির স্নানঘরে টাকা লুকিয়ে রেখেছেন৷ কোটি কোটি টাকা৷ কিন্তু এই বাজেয়াপ্ত হওয়া নোটের মধ্যে পুরনো নোটের সঙ্গে নতুন নোটও রয়েছে৷ আর এই নতুন নোটের পরিমান কম কিছু না৷ বহু জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে বান্ডিল বান্ডিল নতুন ২০০০-এর নোট৷
প্রশ্ন উঠছে দেশে যেখানে নগদ টাকার আকাল, ব্যাঙ্ক থেকে পুরনো টাকা বদল করতে কিংবা তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে সেখানে দেশের একশ্রেণির মানুষের হাতে এত নতুন নোট আসছে কিভাবে? খানা তল্লাশির পর গত বুধবার আয়কর অফিসাররা জানাচ্ছেন, দেশের মাত্র দুটি রাজ্য থেকেই শুধু উদ্ধার হয়েছে ২০২ কোটি টাকার ২ কোটি নতুন নোট৷ আর সোনা উদ্ধার হয়েছে ১ কোটি টাকা মূল্যের৷ প্রশ্ন উঠছে দেশের কিছু মানুষের হাতে এত নতুন টাকা আসছে কোথা থেকে? যেখানে সাধারণ মানুষকে টাকা বদলাতে এত হিমসিম খেতে হচ্ছে৷ তবে কি সরষের মধ্যেই ভূত? সে প্রশ্নটা তাই এসেই যাচ্ছে৷
কথায় বলে আইন আছে তো আইনের ফাঁকও আছে৷ তাহলে কি সেই ফাঁক পথেই নতুন নোটগুলি পৌঁছছে কালো টাকার কারবারিদের হাতে? আমাদের দেশের অর্থনীতির হাল হকিকত এবার বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলির আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ বিদেশি সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, ভারতের নতুন নোট ইতিমধ্যেই দুর্নীতির কাজে ব্যবহার হতে শুরু করেছে৷ আর এই খবরেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য৷ শঙ্কা জাগছে দেশের আমআদমির মনে৷ তাহলে কি তাদের এত লড়াই সবই ব্যর্থ?
The post ভারতের নতুন নোটও ব্যবহার হচ্ছে দুর্নীতিতে, দাবি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের appeared first on Sangbad Pratidin.